পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ায় সম্প্রতি একের পর এক ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটছে, যা পুরো অঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এই অঞ্চলে যে ভূমিকম্পগুলো ঘটছে, সেগুলোকে অনেকেই বড় কোনো বিপর্যয়ের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছেন।
ঠিক এমন এক প্রেক্ষাপটে এবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ পাকিস্তান।
শনিবার (১২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩১ মিনিটে পাকিস্তানের একাধিক শহরে অনুভূত হয় ৫ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প। খবর জিও নিউজ।
পাকিস্তানের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ন্যাশনাল সিসমিক মনিটরিং সেন্টার জানায়, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিন্ডি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং ভূপৃষ্ঠের ১২ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের কম্পন দেশের রাজধানী ইসলামাবাদ ছাড়াও লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার, নওশেরা ও আরও অনেক ছোট-বড় শহর এবং গ্রামে অনুভূত হয়েছে। হঠাৎ এই ভূমিকম্পে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন।
ইসলামাবাদের সেক্টর ১১ এলাকার এক বাসিন্দা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে বলেন, আমরা হঠাৎই অনুভব করলাম ভবনটি দুলছে। দ্রুত বাইরে বেরিয়ে আসি। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ভেতরে যাই।
তবে এখন পর্যন্ত দেশজুড়ে কোনো হতাহত বা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, যা কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূগর্ভস্থ টেকটোনিক প্লেটগুলোর অবস্থানগত কারণে পাকিস্তান প্রাকৃতিক দুর্যোগের উচ্চঝুঁকির একটি এলাকায় অবস্থিত। দেশটি ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে থাকায় মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে পড়ে।
এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৪০০ মানুষ এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
বর্তমান ভূমিকম্পটি তুলনামূলকভাবে ছোট হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বড় কোনো ভূমিকম্পের পূর্বসংকেত হতে পারে। তাই জনগণকে সতর্ক থাকতে এবং জরুরি প্রস্তুতি নিয়ে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
মন্তব্য করুন