একদিন ঘোড়ার আস্তাবলে বসে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন রাসুল (সা.) এর সাহাবি হজরত উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.)। এ সময় তার ঘোড়া লাফাতে শুরু করল।
তিনি একটু থামলেন। এরপর আবারও তিলাওয়াত শুরু করলেন। আবারও এটি লাফাতে শুরু করল। এবারও তিনি থেমে গেলেন। কিছুক্ষণ পর আবার পড়তে শুরু করলেন। ঘোড়াটি আবারও লাফ দিল।
পাশেই উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.)-এর ছেলে ইয়াহইয়া শুয়ে ছিলেন। এই সাহাবি বলেছেন, আমার শঙ্কা হলো যে ঘোড়াটি আমার ছেলেকে পিষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই আমি উঠে তার কাছে গেলাম। হঠাৎ মাথার ওপর শামিয়ানার মতো কিছু একটা দেখতে পেলাম। তার ভেতর প্রদীপের মতো অনেক জিনিস পুরো শামিয়ানাটাকে আলোকিত করে রেখেছে। আমি দেখামাত্রই সেগুলো ওপরে উঠে মুহূর্তেই শূন্যে মিলিয়ে গেল। আমি আর সেটা দেখতে পেলাম না।
ওই সাহবি বলেন, পরদিন সকালে রাসুল (সা.) এর কাছে গেলাম। জানালাম, গতকাল রাতে আমার ঘোড়ার আস্তাবলে কোরআন পড়ছিলাম। ঘোড়াটি তখন হঠাৎ লাফাতে শুরু করে। নবী (সা.) তার কথা শুনে বললেন, হে ইবনে হুজাইর! তুমি কোরআন পাঠ চালিয়ে যেতে! তিলাওয়াত কেন থামালে?
জবাবে উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি আবারও পড়া শুরু করলাম। ঘোড়াটি আবারও লাফাতে থাকল। এবারও নবী (সা.) বললেন, ‘হে ইবনে হুজাইর, তুমি তিলাওয়াত করতে থাকতে।’
এবার উসায়দ ইবনে হুজাইর (রা.) বললেন, আমি তিলাওয়াত শেষ করে দিলাম। কারণ, আমার ছেলে ইয়াহইয়া ঘোড়াটির পাশেই ছিল। ঘোড়াটি আমার ছেলেকে পিষ্ট করে ফেলতে পারে, সেই আশঙ্কায় আমি তিলাওয়াত শেষ করতে বাধ্য হলাম।
এ সময় এই সাহাবি আরও বলেন, হে রাসুল সা. আমি মেঘপুঞ্জের মতো কিছু একটা দেখতে পেয়েছিলাম, যার মধ্যে প্রদীপের মতো কোনো বস্তু আলো দিচ্ছিল। আমি দেখামাত্রই সেটা ওপরে উঠে গেল। এমনকি তা আমার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেল।
নবী (সা.) তার কথা শুনে বললেন, ওরা ফেরেশতা। ওরা তোমার কোরআন তিলাওয়াত শুনছিল। তুমি পড়তে থাকলে ওরা ভোর পর্যন্ত থাকত। লোকজনও ওদের দেখতে পেত। ওরা লোকজনের দৃষ্টির আড়াল হতো না।’
মন্তব্য করুন