বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় থাকে অস্ট্রেলিয়া, কানাডার মতো দেশগুলো। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ উচ্চশিক্ষা এবং কাজের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমায়। এর ফলে দিনদিন দেশটির জনসংখ্যা বাড়ছে, সেইসঙ্গে বাড়ছে দেশটির জীবনযাত্রার ব্যয়। তাই অভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার ধাপগুলোতে কঠোর করতে যাচ্ছে অস্ট্রেলীয় সরকার।
জানা গেছে, কানাডায় অভিবাসীর চাপে বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সামনের দিনগুলোয় এই ভাড়া আরও বাড়তে পারে। বিষয়টি মাথায় রেখে চলতি মাস থেকেই নতুন নিয়মে স্টুডেন্ট ভিসা দিবে দেশটি। পাশাপাশি ২৩ মার্চ থেকে স্টুডেন্ট ও গ্র্যাজুয়েট ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা বিষয়ক পরীক্ষা আইএলটিএস’র নম্বর আরও বেশি পেতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার পড়াশুনা শেষে অস্থায়ীভাবে থাকা এবং কাজ করার জন্য যে ভিসা দেওয়া হয় সেটিকে গ্র্যাজুয়েট ভিসা বলা হয়। এ ছাড়া যদি কোনো প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আনার ক্ষেত্রে বারবার নিয়ম ভঙ্গ করে তাহলে ওই প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করতে পারবে সরকার। অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নিল এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই ব্যবস্থা অভিবাসীর সংখ্যা নামিয়ে আনা অব্যাহত রাখবে।
এ ছাড়া ‘সত্যিকারের শিক্ষার্থী’ নিরূপণেও নতুন একটি পরীক্ষা সংযু্ক্ত করা হবে। মূলত যেসব আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পড়াশোনার নাম করে অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করতে আসে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে ভিজিট ভিসায় আসা ব্যক্তিদের ওপর ‘আর অবস্থান করা যাবে না’ এমন নিয়ম প্রয়োগ করা হবে।
করোনাকালীন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সরকার স্টুডেন্ট ভিসায় অনেক ছাড় দেয়। ওই সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে বর্তমান সরকার জানিয়েছে ভিসার নিয়ম কঠিন করা হবে যেটির মাধ্যমে অভিবাসীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে। করোনা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জায়গায় কর্মীর সংকট দেখা দেয়। এরপর ২০২২ সালে বার্ষিক অভিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় দেশটি। তবে এরপর হঠাৎ করে অসংখ্য অভিবাসী ও শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় আসার বাড়ি ভাড়া সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে ভিসা প্রাপ্তির হার ৩৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয় কানাডিয়ান সরকার। সেই সঙ্গে জীবনযাত্রার ব্যয় ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ৬৩৫ কানাডিয়ান ডলারে বাড়িয়েছে দেশটি। ফলে উচ্চশিক্ষা অর্জনে কানাডায় পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য করুন