কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সামরিক শক্তিতে এই মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশ

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শক্তিশালী সামরিক বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু দেশের সুরক্ষাই নয়, অন্য দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বিশ্বমঞ্চে নিজের প্রভাব বিস্তারেও সামরিক শক্তি অন্যতম বিবেচ্য বিষয়। আর এজন্যই বিশ্বের প্রতিটি দেশ তার সামরিক শক্তিকে প্রতিনিয়ত বাড়ানোর চেষ্টা করে থাকে। অনেক দেশ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে শুধু এ খাতে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণ করে প্রতি বছর একটি তালিকা প্রকাশ করে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার। সে অনুযায়ী ২০২৫ সালেও বিশ্বের শীর্ষ ১৪৫টি দেশের সামরিক শক্তি র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। মোট ৬০টি আলাদা আলাদা বিষয়কে বিচার-বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা সূচক স্থির করা হয়েছে শূন্যকে। অর্থাৎ, যে দেশ শূন্যের যত কাছে পয়েন্ট পাবে, তাদের সামরিক শক্তি তত বেশি।

সৈন্যশক্তির দিক থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। এ ছাড়া কোন দেশের কাছে কী কী অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে, তালিকা তৈরির সময়ে সেটিও খতিয়ে দেখেছেন সমীক্ষকরা। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে রিপোর্টে।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী এই মুহূর্তে বিশ্বে সামরিক শক্তিতে শীর্ষস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের পয়েন্ট ০.০৭৪৪। দেশটির হাতে রয়েছে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ সদস্যের বিশাল সামরিক বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১৩ লাখ ২৮ হাজার। বিশ্বের সুপার পাওয়ার দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ৭ লাখ ১ হাজার ৩১৯ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১০৮ নৌসেনা।

যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক সব মারণাস্ত্র। অস্ত্র তৈরির সক্ষমতায়ও যুক্তরাষ্ট্র অন্য সব দেশ থেকে এগিয়ে। প্রতি বছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করে দেশটি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্রের মজুতও দেশটির হাতে। দেশের বাইরে অন্তত ১০০টি সেনাঘাঁটি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সেখান থেকে বিশ্বের যে কোনো জায়গায় স্বল্প সময়ের মধ্যে আক্রমণ করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেটও অন্য যে কোনো দেশ থেকে অনেক অনেক বেশি। ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার কোটি ডলার খরচ করেছে বর্তমান বিশ্বের ‘সুপার পাওয়ার’ দেশটি।

বিশ্বের শক্তিশালী দেশের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া। সূচকে রাশিয়া পেয়েছে ০.০৭৮৮ পয়েন্ট। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে রাশিয়ার হাতে। এই সংখ্যা আনুমানিক সাড়ে পাঁচ হাজারের আশপাশে। আর সৈন্য সংখ্যার নিরিখে রাশিয়ার রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ সামরিক বাহিনী।

র‌্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকা চীনের সূচক নম্বরও রাশিয়ার সমান। অর্থাৎ চীনও পেয়েছে ০.০৭৮৮ পয়েন্ট। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’ জানিয়েছে, ‘পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক বাহিনী। বর্তমানে রেড ড্রাগনের দেশের মোট সৈন্য সংখ্যা ৩১ লখি ৭০ হাজার। এমনকি, রণতরীর সংখ্যায়ও যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলেছে চীন। বিশ্বের বৃহত্তম নৌবহর এখন শি জিনপিংয়ের দেশের।

তালিকায় ভারতের অবস্থান চতুর্থ স্থানে। ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’ সূচকে ভারতের পয়েন্ট ০.১১৮৪। দেশটির মোট সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১৪ লাখ ৫৫ হাজার। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা রয়েছে এই দেশে। ভারতের মোট জনসংখ্যা ১৪০ কোটিরও বেশি। ফলে এই দেশের রিজার্ভ সেনা সংখ্যার আকারও অনেক বড়। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচকে পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। গত কয়েক বছর ধরেই সামরিক ব্যয় বরাদ্দ অনেকটা বাড়িয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ফলে বিশ্বের শক্তিশালী দেশের তালিকায় তারা উপরের দিকে উঠে এসেছে। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স বরাবরের মতোই সুপার সেভেনের মধ্যে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।

ফ্রান্সের পরেই অর্থাৎ ৮ নম্বরে রয়েছে জাপানের অবস্থান। জাপানও শেষ কয়েক বছরে তার সামরিক ব্যয় বরাদ্দ অনেক বাড়িয়েছে। সামরিক বাহিনীর আকার খুব বেশি বড় না হলেও জাপানের প্রতিরক্ষা খাতে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য অস্ত্র কিনে থাকে দেশটি। সম্প্রতি বড় বড় সমরাস্ত্র প্রজেক্টে অংশীদারও হয়েছে টোকিও।

তালিকায় নবম ও দশম স্থানে অবস্থান করছে যথাক্রমে তুরস্ক এবং ইতালি। ড্রোনশক্তির কারণে বিশ্বে আলাদা পরিচিতি তৈরি করেছে তুরস্ক। দেশটি ইতোমধ্যে প্রায় ৩০টি দেশের কাছে তাদের সামরিক ড্রোন বিক্রি করেছে। আলোচিত নেতা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের নেতৃত্বে দেশটি উচ্চভিলাষী সব সামরিক প্রকল্প সামনে নিয়ে কাজ করছে।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের তালিকায় মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের অবস্থান ১২তম। ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান ১৩তম এবং ইরান রয়েছে ১৬তম অবস্থানে। এছাড়া মিসর ১৯তম অবস্থানে এবং ২৪তম অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব। বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শক্তির তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ৩৫তম।

তবে এশিয়ার দেশগুলোর সামরিক শক্তির তালিকায় বাংলাদেশের স্থান ১৭তম। বাংলাদেশের মোট সামরিক বাহিনীর আকার প্রয় ৭ লাখ। এর মধ্যে সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭,৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫,১০০ নৌসেনা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সারা দেশে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

‘দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করছে নিরাপদ সড়ক চাই’

২৯ জানুয়ারি : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে 

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা

রাজশাহীতে শিয়ালের কামড়ে নারীসহ আহত ৮

‘জনগণের ভোটের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে’

সব ধরনের অনুদান ও ঋণ স্থগিত করলেন ট্রাম্প

নেত্রকোনায় আ.লীগ নেতা নজরুল গ্রেপ্তার

বুধবার ঢাকার যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২৯ জানুয়ারি : আজকের নামাজের সময়সূচি

১০

আল্লাহর ওপর ভরসা রাখলে রিজিক বাড়ে

১১

দ্রুত দেশে ফিরতে চান খালেদা জিয়া

১২

রেলকর্মীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, জানালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

১৩

নিজ দেশবাসীকে সুখে রাখতে ট্রাম্পের নয়া ভাবনা

১৪

গুগল ম্যাপে দেখা যাবে নতুন এক উপসাগর

১৫

রিমোট কাজের জন্য ভিসা সহজ করল নিউজিল্যান্ড

১৬

আসছে মোস্তফা আলম বনির গল্প ছন্দে স্বাস্থ্যকথা

১৭

ইডেন ছাত্রী পুষ্পিতার মৃত্যুর সংবাদে ভিন্ন ছবি প্রচার

১৮

চিরিরবন্দরে ড্রাম ট্রাকের সংঘর্ষে মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু

১৯

শরীয়তপুর সাংবাদিক সমিতির ঢাকা’র নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক

২০
X