হঠাৎ করেই ধীর হয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর গতি। একই সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে দিন। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, পৃথিবী বসবাসের উপযোগী হওয়ার আগে এর আহ্নিক গতির বেগ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং মহাকাশে পৃথিবীর অবস্থান ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে।
তারা উদ্ভাবন করেছেন, পৃথিবীতে জীবনের সূচনার সময় দিন ছিল অনেক ছোট, কিন্তু পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীরে ধীরে কমে যাওয়ায় দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে। পৃথিবীতে জীবের উত্থানের রহস্যটিও বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ধাঁধা।
বিজ্ঞানীরা জানার চেষ্টা করছেন, পৃথিবীতে জীবনের উত্থান ঘটানোর জন্য কী কী উপাদান কাজ করেছে। এটি শুধু পৃথিবীর বাইরের জীবনের অনুসন্ধান সহজ করবে না, ভবিষ্যতে এমন একটি গ্রহ খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে যেখানে জীবন থাকতে পারে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি ধীরে ধীরে কমে যাওয়ার কারণেই পৃথিবীতে অক্সিজেন এত বেশি পরিমাণ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এ-ও জানার চেষ্টা করেছেন যে, পৃথিবীতে কখন অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছিল? কারণ অক্সিজেন সবসময় এত বেশি ছিল না।
কখন পৃথিবীতে অনেক অক্সিজেন ছিল তা জানতে গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের হিউরন লেকের মিডল আইল্যান্ড সিঙ্কহোলের সায়ানোব্যাকটেরিয়া ম্যাটের তদন্ত করে। ২৩ মিটার গভীরতার ওই জায়গায় তারা পৃথিবীতে জীবনের শুরু হওয়ার সময়ের প্রমাণ পান। সে সময় সেখানে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল কম ও সালফারের পরিমাণ ছিল বেশি। তখন সায়ানোব্যাকটেরিয়া অক্সিজেন উৎপন্ন করে। এ কারণেই গ্রিট অক্সিডেশন ইভেন্ট ২৪০ কোটি বছর আগে ঘটে।
সায়ানোব্যাকটেরিয়ার সমস্যা ছিল যে, দিনের দৈর্ঘ্য কম থাকায় তারা শুধু কিছু ঘণ্টা অক্সিজেন তৈরি করতে পারত। পরে যখন পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি কমে গিয়ে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে, সূর্যের আলো বেশি পাওয়া শুরু হয় এবং এর ফলে পৃথিবীতে আরও বেশি অক্সিজেন উৎপন্ন হতে শুরু করে।
নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত গবেষণা স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে যে, দিনের দৈর্ঘ্য ও পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধির মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক ছিল। এটি চাঁদের কারণে হয়। আজকের পরিস্থিতি এমন যে, দূষণ বাড়লেও অক্সিজেনের জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হয় না।
মন্তব্য করুন