মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি এ অভ্যুত্থান এবং শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কলকাঠি নাড়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দেন।
বাংলাদেশে রাজপথের বিক্ষোভ এবং শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের পেছনে মার্কিন ভূমিকার ধারণা এবং অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন জ্যাক সুলিভান। তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তারাও বিশ্বাস করেন না যে ঢাকার ঘটনার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে স্থানীয় সময় হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে সাংবাদিকদের একটি নির্বাচিত দলের সঙ্গে কথা বলার সময় সুলিভান ওই মন্তব্য করেন। সেখানে মূলত মার্কিন-ভারত সম্পর্ক এবং বাইডেন পরবর্তী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা হয়। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের।
এ সময় বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে মার্কিন হাত থাকার গুঞ্জন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সুলিভান বলেন, আমি বিনয়ের সঙ্গে এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করব। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ছিল, এমন ধারণা হাস্যকর। ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারাও বিশ্বাস করেন না যে, আমরা এর পেছনে ছিলাম।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় অনেক রাজনীতিবিদ সভা-সমাবেশে বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের পেছনে মার্কিন ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা অসংখ্যবার মার্কিন প্রসঙ্গ নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন।
গত বছরের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টাও করছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে কোন স্ট্যাটাসে আছেন, সেটা বাংলাদেশের কাছে বিবেচ্য নয়। তাকে ফেরত চাওয়ার সঙ্গে স্ট্যাটাস জানতে চাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।
শেখ হাসিনাকে কোন আইনে ঢাকা ফেরত চেয়েছে—এমন প্রশ্নের উত্তরে মুখপাত্র বলেন, এটা জানতে চাওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। সবাই জানে যে তিনি ভারতে আছেন। এটা আবার আলাদা করে কেন জানতে চাইতে হবে? তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার একজন নাগরিককে ফেরত চেয়েছে। এখানে ভারতে তিনি কোন স্ট্যাটাসে রয়েছেন, সেটি বিবেচ্য বিষয় কেন হবে?
শেখ হাসিনার ভিসা এক্সটেন্ড করার বিষয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের সংবাদ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘কারও পাসপোর্ট বাতিল করা হলে সব দেশকে জানিয়ে দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গেলে ভিসার কোনো ইস্যু থাকে না।’
মন্তব্য করুন