প্রেম ভালোবাসা পবিত্র। তা মানে না বয়স, পরিবেশ, পরিস্থিতি। হঠাৎ বৃষ্টির মতো সবার জীবনেই আসে প্রেম। তখন শত দুর্যোগ, ঝড়, ঝাপটা মাড়িয়ে একে অন্যকে কাছে পেতে চান প্রেমিক যুগল। এ কাজে ব্যর্থতার পরিচয়ও দেন কেউ কেউ। কিন্তু যৌবন পেরিয়ে মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েও পরিণয়ে যে সফল হওয়া যায়, একশ বছর বয়সেও তা প্রমাণ করেছেন, এই নবদম্পতি। যা গোটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি হয়ে তারা রীতিমতো বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন প্রেমে ব্যর্থ মানুষদের হৃদয়ে।
বৃদ্ধাশ্রমেই তাদের পরিচয় ও পরিণয়। প্রেমিক বার্নি লিটম্যানের বয়স ঠিক একশ’ আর প্রেমিকা মারজোরি ফিটারম্যানের বয়স সামান্য বেশি, ১০২ বছর। জীবনের প্রান্তে এসে তারা প্রমাণ করলেন তাদের ভালোবাসা কতটা খাঁটি ও নির্মল। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তর শহর ফিলাডেলফিয়ার একটি বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা এই নবদম্পতি। দুজনই এখন থাকেন বৃদ্ধাশ্রমের একই তলায়।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খবরে জানানো হয়, মারজোরির স্বামী এবং বার্নির স্ত্রী বেঁচে নেই। তবু জীবনের শেষ সময়ে দুজনের কেউই ভাবেননি, অন্তিম সময়ে এসে পেয়ে যাবেন ভালোবাসার মানুষ। বৃদ্ধাশ্রমে ৯ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর গত ১৯ মে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হোন। এর মাধ্যমেই গিনেস বুকে নাম লেখালেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নবদম্পতি হিসেবে।
প্রেমের সময়টাও ছিল চমৎকার। বৃদ্ধাশ্রমের এক কস্টিউম পার্টিতে বার্নি প্রথম দেখেন মারজোরিকে। সেদিনই মারজোরিকে মনে ধরে বার্নির। এরপরই দুজনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর বার্নির নাতির সন্তানের জন্মের দিন তারা দুজন পরস্পরের সঙ্গে জম্পেশ আড্ডা দেন। মন দেওয়া-নেওয়ার কাজটা সেরে নেন সেদিনই।
ব্যক্তিগত জীবনে মারজোরি আর বার্নি পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। পেশায় বার্নি ছিলেন প্রকৌশলী আর মারজোরি পড়াশোনা শেষে বেছে নেন শিক্ষকতা পেশাকে। দুজন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েলেও, কেউ কাউকেই চিনতেন না।
জানা যায়, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানটি হয় ঠিক যেখানে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল। বার্নির নাতনি সারাহ সিচারম্যান জানান, শতবর্ষী জুটির বিয়ের খবরে পুরো পরিবারই ‘রোমাঞ্চিত’। তারা একে অন্যকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে দুজনই ভাগ্যবান মনে করছেন। একে অন্যের প্রতি বেশ যত্নশীল। বিশেষ করে করোনা মহামারির সময় দুজন দুজনের পাশে ছিলেন।
পরিবারের সদস্যদের ধারণা ছিল, তাদের যা বয়স, তাতে কেউই বিয়ের কথা ভাববেন না। কিন্তু এই বয়সে বিয়ে করতে চেয়ে নিশ্চিতভাবেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তারা।
মন্তব্য করুন