মাওরি জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ওপর রাষ্ট্র ও চার্চের অবর্ণনীয় অত্যাচার এবং অবহেলার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্র এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়ার সময় যেসব মানুষ শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের কাছে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন তিনি এবং তার সরকার।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর নিকট রাষ্ট্র ও চার্চের পক্ষ থেকে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, এমন ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সে জন্য সরকার সতর্ক থাকবে এবং যে ঘটনার জন্য আজ আমরা দুঃখিত, তার সঠিক তদন্ত করা হবে।
এর আগে দেশটি মাওরি জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সম্প্রদায় দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছিল, তারা সাহায্য প্রার্থনা করতে গিয়ে রাষ্ট্র বা চার্চের কাছে অত্যাচারিত হয়েছেন। এরপর এ অভিযোগের ভিত্তিতে দেশটির সরকার একটি কমিশন গঠন করেন। কমিশনটি ১৯৫০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ রাষ্ট্র এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়ার সময় অত্যাচার ও হেনস্থার শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে বহু শিশু রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক শিশু অকারণে তাদের মায়েদের কাছ থেকে আলাদা করে দত্তক দেওয়া হয়েছে। নারী এবং শিশুদের ওপর চালানো অত্যাচারের মধ্যে যৌন নির্যাতন, শারীরিক নির্যাতন এবং হেনস্থার পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক দেওয়ার মতো ভয়ংকর ঘটনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন তদন্তে উঠে এসেছে, এসব অত্যাচারের পেছনে মূলত বর্ণবাদী মনোভাব কাজ করেছে। বিশেষ করে মাওরি জনগোষ্ঠী বিরুদ্ধে। মাওরিরাই সবচেয়ে বেশি এই অত্যাচারের শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুকসন বলেছেন, এই ঘটনার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে দোষীদের চিহ্নিত করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এমন কিছু আর না ঘটে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ছাড়া, তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তদন্তের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন