মায়ের মন সন্তানের জন্য কোনো বাধ মানে না। আর তাই ৩০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছেলের পথ চেয়ে এখনও বসে আছেন তার বৃদ্ধা মা।
ছেলে একদিন আসবে, এই আশাই বাঁচিয়ে রেখেছে তাকে। এমনকি পুরো গ্রাম অন্যত্র চলে যাওয়ার পরও, পরিত্যক্ত গ্রামে একাই থাকেন তিনি। এই আশায়, যদি কোনো দিন ছেলে ফেরে!
ছেলে আর ফিরবেন কি না জানেন না বৃদ্ধা মা। কিন্তু যদি ছেলে ফেরে, তাহলে তো তাকে এখানেই খুঁজতে আসবেন। আর তাই ছেলের অপেক্ষায় একাই পাহাড়ি গ্রাম আমুশিতে দিন কাটাচ্ছেন ৯২ বছর বয়সী পাতিমাত সাইদোভা। তিনি রাশিয়ার রাশিয়ার দাগেস্তানের বাসিন্দা। গ্রাম ছেড়ে সবাই চলে গেলেও একা থাকতে একটু কষ্ট হয় না সাইদোভার।
১৯৭০-র দশকে আমুশা ছেড়ে নতুন গ্রামে স্থানান্তর করে সেখানকার বাসিন্দারা। কিন্তু নিজের আবাসভূমি ছেড়ে যেতে রাজি হয়নি সাইদোভা। ১৯৯২ সালে সাইদোভার স্বামী মারা যান। এরপর থেকেই পুরো গ্রামে একা থাকছেন এই বৃদ্ধা। সাইদোভার বড় মেয়ে নাপিসাত জানান, তিনি বারবার তার মাকে আত্মীয়দের সঙ্গে থাকার তাগাদা দিয়েছেন। তবে রাজি হননি তার মা।
নাপিসাত বলেন, আমার এক ভাই নিখোঁজ হয়েছেন। মার বিশ্বাস সে ফিরে আসবে। যদি সে কখনও ফিরে আসে, তখন এখানে আসবে।
তার মায়ের বয়স ৯২ বছর। এই বয়সেও তার মা নিজেই ঘরের কাজ করেন। এমনকি রান্নাও তিনিই করেন। কিছুদিন আগেও তিনি মুরগি লালন-পালন করতেন বলেও জানান নাপিসাত। ২০২৩ সালে নাপিসাত যখন তার মায়ের ব্যাপারে এসব কথা বলছিলেন, তখনও বেশ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মনে হয়েছে সাইভোদাকে।
নাপিসাত বলেন, মা কখনও ডাক্তারের কাছে যান না। কেবল ওষুধ খান। এত বয়সেও সারাজীবনে মাত্র দুই বা তিনটি ইনজেকশন নিয়েছেন।
ছয় সন্তান ও ডজনের বেশি নাতিপুতি রয়েছে সাইদোভার। তারা প্রায়ই সাইদোভাকে দেখতে আসেন। কিন্তু বড় শহরে যেতে কখনও সাইদোভাকে রাজি করাতে পারেনি তারা। দিন গড়িয়ে রাত হয়, কাটে দিন, মাস, বছর। তবুও ছেলে আসে না। কিন্তু রোজা ও নামাজ পড়ে ছেলের জন্য দোয়া করা সাইদোভার বিশ্বাস, একদিন ঠিকই ঘরের কড়া নাড়বে তার হারিয়ে যাওয়া ছেলে।
মন্তব্য করুন