অস্ট্রেলিয়ায় দ্রুত গতিতে এমপক্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। জুলাই থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭২৪ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তি বৃদ্ধির হার ৫৭০ শতাংশ। দেশটির কেন্দ্রীয় তথ্য ভান্ডার থেকে এ পরিসংখ্যান জানা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে এমপক্স ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হার দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আগামী মাসেও এ হার কমার কোনো লক্ষণ নেই। কারণ, যে হারে রোগী বাড়ছে সে হারে টিকা দেওয়ার হার বাড়াতে পারছে না সরকার। টিকা দেওয়ার হার কম হওয়ায় এমপক্স দুর্গম গ্রামে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
দেশটিতে গত বছর ২৬ জন এবং ২০২২ সালে ১৪৪ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এই বছর নতুন আক্রান্তদের বেশিরভাগই দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের বেশিরভাগ নারী। অস্ট্রেলিয়ান ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথ অ্যান্ড এজড কেয়ারের একজন মুখপাত্র বলেন, এই বছরের মে থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ভাইরাসটি মেট্রো অঞ্চলের বাইরে শনাক্ত হচ্ছে যেখানে টিকা দানের হার কম। সিডনির যৌন স্বাস্থ্য চিকিৎসক এবং জেনারেল প্র্যাকটিশনার ম্যাথিউ শিল্ডসও একই তথ্য দিয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস কিরবি ইনস্টিটিউটের মহামারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যান্ড্রু গ্রুলিচ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় এখন পর্যন্ত এমপক্সের সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। এখনই তা মোকাবিলা সম্ভব না হলে মহামারি রূপ নেবে।
প্রসঙ্গত, কঙ্গোতে এমপক্স মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এর প্রাদুর্ভাব আশপাশের দেশেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। ডব্লিউএইচও আন্তর্জাতিক শক্তিকে আহ্বান জানিয়ে বলে, এমপক্স আফ্রিকায় থাকতেই সমন্বিত উদ্যোগে তা নির্মূল করতে হবে। বিশ্বজুড়ে সবাইকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। নয়তো বিশ্বব্যাপী ভয়ংকর রূপ নিতে পারে এ ভাইরাস।
এদিকে নানা সমস্যায় জর্জরিত কঙ্গো ভাইরাসটি রোধে ব্যর্থ। দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস পুরো বিশ্বের জন্যই হুমকিস্বরূপ। বিষয়টি বিবেচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনুদান হিসেবে দেশটিতে টিকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই টিকার প্রথম চালানটিই ৫ সেপ্টেম্বর পায় কঙ্গো।
এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারা মাঙ্কিপক্সের প্রথম টিকার অনুমোদন দিয়েছেন। এবার এটি বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা যাবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের টিকা সংগ্রহ-বিতরণে গতি বাড়াতে হবে। এই রোগের সংক্রমণ, বিস্তার ও প্রাণহানি ঠেকানোর জন্য যেসব স্থানে টিকা এখন সবচেয়ে জরুরি, সেসব স্থানের মানুষ যাতে সবার আগে টিকা পান, আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।’
মন্তব্য করুন