বন্যা অথবা ঝড়ের চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠছে তাপপ্রবাহ। এর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। জাতিসংঘের রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। খবর ডয়েচে ভেলের ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জানান, বিশ্বজুড়ে তাপপ্রবাহ কার্যত মহামারির চেহারা নিয়েছে। তিনি বলেন, গত সোমবার ছিল পৃথিবীর উষ্ণতম দিন। তার আগের দিনও ছিল ভয়াবহ গরম।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সোমবার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, বন্যা কিংবা ঝড় দেখতে পাওয়া যায়। তাপপ্রবাহ দেখতে পাওয়া যায় না। কিন্তু এই তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বিপজ্জনক। মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে তাপপ্রবাহ। ২০০০ সাল থেকে ২০১৯ এর মধ্যে প্রতি বছর শুধু তাপপ্রবাহের জন্য মৃত্যু হয়েছে চার লাখ ৮৯ হাজার মানুষের। সেখানে প্রতি বছর সাইক্লোনের জন্য় মৃত্যু হয়েছে গড়ে ১৬ হাজার মানুষের।
তিনি বলেন, এই ভয়াবহ তাপপ্রবাহ এড়িয়ে চলার জন্য সবার সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে নজর দেওয়া দরকার ছোটদের দিকে, বৃদ্ধদের দিকে এবং অসুস্থ মানুষদের দিকে। এই তাপপ্রবাহের জন্য় খাদ্য-সুরক্ষা ব্য়বস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় খরা হচ্ছে। খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশে তাপপ্রবাহের সতর্কতা বার্তা যেন আরও ভালোভাবে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হলে কৃত্রিমভাবে ঠাণ্ডার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি, তাপপ্রবাহ কমানোর জন্য শহরের পরিকাঠামোগত বদল করতে হবে। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে লাগাম টানতে হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বনশূন্য পরিবেশের কথা বলেছে জাতিসংঘ।
মহাসচিব জানান, সে লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়তো সম্ভব হবে। পৃথিবীর ৫৭টি দেশে যদি তাপপ্রবাহের সতর্কতা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়, তাহলে বছরে অন্তত ৯৮ হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য নিয়েই এ হিসেবে পৌঁছানো গেছে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন