মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর একদমই দেরি করেনি মেক্সিকো। দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শিনবাউম কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকায় ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করেছে মেক্সিকো। এরআগে সীমান্তে মাদকের চোরাচালানের অভিযোগে মেক্সিকো সরকারকে দোষারোপ করেন ট্রাম্প। দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেন ট্রাম্প।
সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট শিনবাউম। সেখানেই উভয় নেতা সমঝোতায় পৌঁছান। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মেক্সিকোর পণ্যে আপাতত অতিরিক্ত এই শুল্ক আরোপ করা হবে না। বিনিময়ে সীমান্ত সুরক্ষা আরও নিশ্চিত করতে হবে মেক্সিকোকে। এরপরই শিনবাউম উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন।
সীমান্ত পাহারা দেওয়ার জন্য ওই অর্থে মেক্সিকোর নির্দিষ্ট কোনো বাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। কেননা সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব থাকারা অস্ত্র বহন করতে পারবে না। তাই অবৈধ অভিবাসী ও মাদকের চোরাচালান ঠেকাতে মেক্সিকোর ভরসা সেনাবাহিনী ও ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। মাত্র কয়েক বছর আগেই এই বাহিনী তৈরি করা হয়। সম্প্রতি ন্যাশনাল গার্ডকে সেনাবাহিনীর অধীনে দেওয়া হয়।
মার্কিন গণমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, শিনবাউম সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ডের অতিরিক্ত ১০ হাজার সদস্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকায় পৌঁছেছে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। তাদের কাজ হবে মূলত মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের মতো মাদকের চোরাচালান বন্ধ করা হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে ন্যাশনাল গার্ডই মেক্সিকোর একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।
২০১৯ সালে ট্রাম্পের চাপাচাপি মেক্সিকোর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে ম্যানুয়েল লোপেজ ওবরাদোর গুয়েতেমালা লাগোয় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করে। এখন ১ লাখ ৩০ হাজার সদস্যের এই বাহিনীকে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তও সুরক্ষিত করতে বলা হচ্ছে। যাতে করে এই সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকের চোরাচালান রোধ করা যায়।
হঠাৎ করে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে উত্তর সীমান্তে সামরিক রিসোর্সেস সরিয়ে নেওয়ায় নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এতে করে মেক্সিকোর অন্য অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়বে। অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ২০১৯ ন্যাশনাল গার্ড প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে গেল সেপ্টেম্বরে আইন সংশোধন করে, বাহিনীকে সেনাবাহিনীর অধীনে নিয়ে আসে। অবশ্য এতেও সমালোচনার জন্ম হয়।
মন্তব্য করুন