যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলের তাণ্ডব চলছে। শহরটি স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের শিকার হয়েছে। দাবানলে ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৪ জন। ধ্বংস হয়ে গেছে ১২ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি এবং পুড়ে গেছে হাজার হাজার একর জমি।
এদিকে দাবানল এখনো কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না; বরং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, বিপজ্জনক ঝোড়ো বাতাসের গতি আরও বাড়তে পারে, যা আগুনকে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছে তাদের প্রধান প্রতিবেশী দেশ কানাডা ও মেক্সিকো।
কানাডার সহযোগিতা
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ঘোষণা দিয়েছেন, দাবানলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে কানাডা থেকে ৬০ জন অভিজ্ঞ দমকলকর্মী যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী হিসেবে আমরা একে অপরকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।
মেক্সিকোর সহায়তা
কানাডার পাশাপাশি মেক্সিকোও দাবানল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করছে। মেক্সিকোর দমকল বাহিনীও যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছে।
দাবানলের ভয়াবহতা
শুষ্ক বাতাসের কারণে দাবানলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। পুরো লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় দমকল বাহিনীর সঙ্গে কারাবন্দিদেরও কাজে লাগানো হয়েছে। তাতেও তারা হিমশিম খাচ্ছে। এমন বিপদজনক পরিস্থিতিতে সহায়তা করতে পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুই প্রতিবেশী কানাডা ও মেক্সিকো।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে। বাস্তুচ্যুত মানুষদের পুনর্বাসন এবং ধ্বংস হওয়া শহরটি পুনর্গঠনে টানা সহায়তা প্রয়োজন হবে।
ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্য
এমন সহযোগিতার সময়েও যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য বানানোর হুমকি দিয়েছেন। পাশাপাশি কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর অতিরিক্ত কর আরোপের পরিকল্পনার কথাও বলেছেন। তার এ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
উল্লেখ্য, লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় এক বিপর্যয়। তবে এমন সংকটময় মুহূর্তে কানাডা ও মেক্সিকোর সহায়তা শুধু দাবানল নিয়ন্ত্রণেই নয়, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মন্তব্য করুন