আজীবনের লালিত স্বপ্ন ছিল পবিত্র হজ পালন করবেন। সেই স্বপ্নকে পুঁজিকে ট্যুর কোম্পানির হাতে টাকাও তুলে দিয়েছিলেন এক মার্কিন দম্পতি। কিন্তু হজ পালন শেষে আর বাড়ি ফেরা হলো না ইসাটু টেজান উরি ও তার স্বামী আলিউ ডৌসি উরির। সিএনএনকে এই দম্পতির মেয়ে সাইদা উরি বলেন, তার বাবা-মায়ের সারাজীবনের স্বপ্ন ছিল হজ পালন করবেন। এজন্য মেরিল্যান্ডের একটি ট্যুর কোম্পানি ২৩ হাজার ডলারও দিয়েছিলেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাউয়ির বাসিন্দা ইসাটু ও আলিউ। ইসাটু পেশায় একজন নার্স ছিলেন। সম্প্রতি তিনি প্রিন্স জর্জেস কাউন্টির কাইজার পারমানেন্টের থেকে হেড নার্স হিসেবে অবসরে যান। আরও প্রায় ১০০ হজযাত্রীর সঙ্গে ওই ট্যুর কোম্পানির মাধ্যমে সৌদি আরব গিয়েছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু তাদের জন্য যথাযথ পরিবহন বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছিল না বলে অভিযোগ করেন সাইদা।
বাবা-মায়ের সঙ্গে সাইদার সর্বশেষ কথা হয়েছিল আরাফার দিন। এদিন পবিত্র হজ পালনে লাখ লাখ হাজি আরাফাতের ময়দানে হাজির হন। সাইদাকে তার বাবা-মা জানান, আরাফাতের ময়দানে যাওয়ার জন্য তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। কিন্তু কোনো গাড়ি আসেনি। তার বাবা-মা তখন মিনায় ছিলেন বলে বিশ্বাস সাইদার। পরে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে হেঁটেই আরাফার দিকে রওনা দেন ইসাটু ও আলিউ।
তীব্র রোদের মধ্যেই হেঁটে আরাফাতের ময়দানে তাদের ট্যুর গ্রুপের সঙ্গে মিলিত হন এই দম্পতি। ট্যুরের অন্য সদস্যরা পাহাড়ে উঠলেও ৭১ বছর বয়সী আলিউ জানান, তিনি আরাফাতের পাহাড়ে উঠতে পারবেন না। এজন্য কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পাহাড়ের পাদদেশেই বসে পড়েন তিনি। পরে ট্যুর গ্রুপে থাকা একজন সাইদার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তার বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সৌদি আরবের জেদ্দায় মার্কিন কনস্যুলেট থেকে পরে সাইদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাকে জানানো হয়, নিখোঁজ হওয়ার দিনই তার বাবা-মায়ের ‘স্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের একজন পরে সাইদাকে জানায়, হিটস্ট্রোকে মারা গেলে, সেটাও স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়। পরে দম্পতিকে সৌদি আরবেই কবর দেওয়া হয়। তবে বাবা-মায়ের কবর কোথায়, তা জানার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন সাইদা।
মন্তব্য করুন