ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহিলা ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক ও ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি যুবনেতা মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন বলেছেন, প্রবাসীদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল হয়। প্রবাসীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধকরণে ভূমিকা পালন করছেন। অথচ এই প্রবাসীরা প্রতিটি সেক্টরে নানাবিধ হয়রানির শিকার হন।
এ সময় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ ও প্রবাসীদের সকল সমস্যা দ্রুত সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সৌদি আরবের জেদ্দা আল-বাওয়াদী শাখার উদ্যোগে জেদ্দার সুক আল-বাওয়াদীর ভোজন বিলাসে আলোচনা সভা ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান মাওলানা নেছার উদ্দিন।
তিনি বলেন, পাসপোর্ট নবায়নে সমস্যা, ছুটিতে দেশে গেলে এয়ারপোর্টের কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাদের মানুষই মনে করে না। তাদের সঙ্গে যা-তা ব্যবহার করেন। তাদের সামানাপত্র ফিক্কা মেরে ফেলেন, লাগেজ আটকে রাখেন, লাগেজ খুলে মালামাল নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও অহরহ। এভাবে নানাবিধ সমস্যায় প্রবাসীরা জর্জরিত।
মাওলানা নেছার উদ্দিন আরও বলেন, প্রবাসে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস কর্মকর্তারাও অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে থাকেন তাদের সঙ্গে। পাসপোর্ট নবায়নে গড়িমসি করে হয়রানি করে থাকেন। প্রবাসীরা কাগজপত্রের সমস্যা, কাজের সমস্যা ও ইকামার সমস্যায় বেশি ভোগেন। বিদেশে কোনো প্রবাসী শ্রমিক কোনো সমস্যায় পড়লে দূতাবাসে জানালেও তারা খুব কমই কেয়ার করেন। এগুলো সমাধানে দূতাবাস উদ্যোগ নিলে খুব সহজেই সমাধান করা যায়। প্রবাসীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে তারা কীভাবে প্রবাসে থাকবে। এমনিই তো প্রবাস জীবন খুব কঠিন জীবন। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী, সন্তান ফেলে রেখে জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকার তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমান। এর মধ্যে যদি সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে হয়রানি ও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে বিদেশে যাওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন অনেকে। এজন্য সব ধরনের হয়রানি বন্ধ ও প্রবাসীদের সকল সমস্যা দ্রুত সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন জেদ্দা মহানগর সভাপতি শায়খ মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সৌদী কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আল-আমীন খলিফা, হাফেজ ইসমাঈল শরীফ, মাওলানা ফরহাদ উল্লাহ, হাজী কাওছার আহমদ। সংগঠনের আল-বাওয়াদী শাখার সভাপতি মাওলানা শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি শেখ ফজলুল করীম নাঈমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ঈদ পুনর্মিলনীতে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, মাওলানা শামসুল হক ভূঁইয়া, হাফেজ মাওলানা এনায়েত উল্লাহ, মাওলানা আতাউল্লাহ, মাওলানা সা’দ উল্লাহ্, মুফতী হাবীবুল্লাহ মোখতার, হাফেজ কেরামত আলী, মাওলানা শেখ মহিউদ্দিন, এনামুল হক এনাম এইচ এম, হারুনুর রশীদ, রুবেল আহমেদ, হাজী ওমর ফারুক বাবু, হাজী সাইফুল ইসলাম, হাফেজ বদিউল আলম, হাজী মকবুল হোসাইন, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, শেখ আনিছুর রহমান আনিছ, মুহাম্মদ তারেক মজুমদার, নাজিম উদ্দিন, মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মুহাম্মদ ইয়াসিন, এম রিয়াদ হোসাইন, আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, রাসেল হোসাইন প্রমুখ।
মাওলানা মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়ার পথে। ব্যাংকগুলো কতিপয় এমপি ও ব্যবসায়ী মিলে খালি করে দেওয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে দেশ ভয়াবহ সংকটে পড়বে। প্রবাসীরা ঘাম জড়িয়ে দেশে টাকা পাঠায় আর সরকারের দুর্নীতিবাজ এমপি-মন্ত্রীরা বিদেশে টাকা পাচার করে বেগম পাড়া বানায়। এই তো তাদের দেশপ্রেম।
মন্তব্য করুন