গাজায় অভিযানের শুরু থেকেই ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের কর্মকর্তারা গত আট মাসে বারবার গাজায় বেসামরিক হত্যা হ্রাসের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো অজুহাতে সেই আহ্বান এড়িয়ে গেছেন নেতানিয়াহু। এই নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বাদানুবাদও হয়েছে। তবে সেই বাদানুবাদই এখন রূপ নিয়েছে টানাপোড়েনে।
টানাপোড়েনের শুরু চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যকে ঘিরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও চিত্রে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বলতে শোনা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রশাসন তার দেশের জন্য পাঠানো অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আটকে রেখেছে। নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যে চরম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে সংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহুর এমন কথাবার্তা আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক এবং বিরক্তিকর। ইসরায়েলকে আমরা যে পরিমাণ সামিরক ও অন্যান্য সহায়তা প্রদান করেছি এবং এখনও করছি, অন্য কোনো দেশ এমনটা করেনি।’
একই প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন পিয়েরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অস্ত্র-গোলাবারুদের একটি বিশেষ চালানে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু ওই চালানটি ব্যতীত অন্য কোনো চালানে বাধা দেওয়া হয়নি। আমরা সত্যিই বুঝতে পারছি না, নেতানিয়াহু আসলে কী বলতে চাইছেন।’
এর আগে মে মাসের শুরুর দিকে গাজা উপত্যকার রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরটিতে লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নেওয়ার কারণে ইসরায়েলি বাহিনীর এই অভিযানে ঘোরতর আপত্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের। তার সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে রাফায় অভিযানের নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু।
এই ঘটনায় ইসরায়েলের জন্য বরাদ্দ একটি মার্কিন সামরিক চালানে স্থগিতাদেশ দেন জো বাইডেন। এটি ছিল ২ হাজার পাউন্ডের বোমার চালান। রাফায় অভিযানের সময় ব্যবহারের জন্য এসব বোমা ওয়াশিংটনের কাছে চেয়েছিল ইসরায়েল।
তবে সম্প্রতিক বক্তব্যকে ঘিরে ক্যাথেরিন জেন পিয়েরে ও জন কিরবির সমালোচনাতেও দমে যাননি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার কিরবির বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত আক্রমণ মেনে নিতে রাজি আছি, তারপরও চাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে গোলাবারুদের চালান অব্যাহত থাকুক। কারণ ইসরায়েলের অস্তিত্বরক্ষার জন্য এই গোলাবারুদ জরুরি।’
মন্তব্য করুন