গাজায় টানা আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে মানুষের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছে বহু গবাদি পশু। অনাহারেও মারা গেছে অনেক। এর ফলে চলতি বছর ফিলিস্তিনে কোরবানির পশুর তীব্র আকাল ছিল।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যতসংখ্যক কোরবানির পশু অবশিষ্ট ছিল, তা ছিল প্রয়োজনের একেবারেই অপ্রতুল। একেকটি পশুর দামও ছিল অতীতের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।
এই অবস্থায় গাজাবাসীর জন্য একটি সমাধানই ছিল, সেটি হচ্ছে- গাজার বাইরে থেকে পশু আমদানি করা। কিন্তু ধর্মীয় এই কর্তব্য পালনেও গাজার মুসলমানদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইসরায়েল। দেশটি গাজার সব কয়টি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়ে কোরবানির পশু প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেছে। ফলে ঈদুল আজহার প্রধানতম কাজ পশু কোরবানিও ঠিকভাবে করতে পারেননি অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বাসিন্দারা।
গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, কোরবানির পশু প্রবেশের ওপর ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঈদুল আজহা উদযাপন এবং ইসলামী ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ হিসেবে কোরবানি করার সুযোগ থেকে এবার বঞ্চিত হয়েছে গাজার কয়েক হাজার পরিবার।
এক বিবৃতিতে গাজা কর্তৃপক্ষ বলেছে, দখলদার বাহিনী নতুন একটি অপরাধ করেছে। তারা রাফা সীমান্ত ক্রসিং দখল এবং বন্ধ করাসহ গাজা উপত্যকার সবগুলো ক্রসিং বন্ধ করে কোরবানির পশু প্রবেশে বাধা দিয়েছে। এটি ‘মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মানবিক ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি পুরোপুরি অবজ্ঞা’ বলে উল্লেখ করেছে গাজার মিডিয়া অফিস।
‘ইসলাম এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে এই অপরাধ’ অব্যাহত রাখার জন্য সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েল এবং মার্কিন প্রশাসনকে দায়ী করেছে গাজার মিডিয়া অফিস। তারা জোর দিয়ে বলেছে, নৈতিক ও আইনগত দায়িত্বের স্বার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় গণহত্যা বন্ধ করতে এবং মুসলিমদের অধিকার ও মানবাধিকারের এই নির্মম লঙ্ঘন বন্ধ করতে গুরুত্ব সহকারে হস্তক্ষেপ করতে হবে।
গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ। টানা আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলি আক্রমণে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতিতে ভুগছে গাজার লাখো মানুষ।
মন্তব্য করুন