ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযান নিয়ে নিজেদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে ইসরায়েলের। গাজায় এ অভিযানের জেরে পদত্যাগ করেছেন নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার দুই সদস্য। ফলে মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে যাচ্ছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার (১০ জুন) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার দুই সদস্য বেনি গান্টজ এবং গাদি আইজেনকোট পদত্যাগ করেছেন। ফলে এখন মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন নেতানিয়াহু।
গান্টজ এবং আইজেনকোট জাতীয় ঐক্য পার্টির সদস্য। এ দলটি নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে ১২টি আসন দখল করে আছে। তারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য নীতি অনুসরণ করার অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া তারা যতদ্রুত সম্ভব আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
এ দুই সদস্যের অভিযোগ, গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহু নিজের ঘোষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশেষ করে হামাসকে নিঃশেষ ও জিম্মিদের ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, গান্টজের পদত্যাগের কারণে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে পারেন নেতানিয়াহু।
এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবর অনুযায়ী, বেনি গান্টজ পদত্যাগ করলেও তাৎক্ষণিক কোনো বিপদে পড়ছেন না নেতানিয়াহু। কেননা গান্টজের দল নেতানিয়াহুর জোট সরকারের শরিক নয়। তাই আপাতত পতন হচ্ছে না নেতানিয়াহু সরকারেরও।
জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে গান্টজ পদত্যাগ করলেও ইসরায়েলি সংসদ নেসেটে নেতানিয়াহুর সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকছে। বর্তমানে নেসেটের ১২০ আসনের মধ্যে ৬৪টি নেতানিয়াহুর জোট সরকারের দখলে রয়েছে। তবে গান্টজ সরকার ছাড়ায় ইসরায়েলি জরুরি মন্ত্রিসভায় এখন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ব্যতীত অন্য কোনো দলের প্রতিনিধি রইল না।
গাজা যুদ্ধের অবসান এবং ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্র এবং জিম্মি পরিবার এই চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহুর জন্য এখন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন বলে মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন নেতানিয়াহু। তিন সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় অন্যতম সদস্য ছিলেন বেনি গান্টজ। যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাজ ছিল গাজা যুদ্ধের তদারকি করা।
মন্তব্য করুন