মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা দেশগুলোকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইরান। এ লক্ষ্যে জোরদার করেছে নিজেদের গোয়েন্দা কার্যক্রমও। এর মধ্যেই ছদ্মবেশে ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে ইরানি গোয়েন্দারা ঢুকে পড়েছে বলে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। যদিও গোয়েন্দাবৃত্তিতে তেহরানের বড় কোনো সাফল্যের নজির এখনো দেখা যায়নি, তবে এ ঘটনা সত্য হলে বেশ বড় ধাক্কা খেতে চলছে পশ্চিমা দেশগুলো। এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কী পদক্ষেপ নেবে ইউরোপীয় দেশগুলো তাই এখন দেখার অপেক্ষা।
লন্ডনভিত্তিক ফার্সি সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিচয় গোপন করে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ডের সদস্যরা ইউরোপের বিভিন্ন বন্দরে প্রবেশ করেছে। তারা নাবিক হিসেবে ইরানের পরিবহন জাহাজ ও তেল কার্গোগুলোতে উঠেছে বলে জানা যায়। এ সময় যারা এসব তথ্য দিয়েছেন তারা মধ্যপ্রাচ্যের একটি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলেও জানায় সংবাদমাধ্যমটি।
সূত্র জানায়, আইআরজিসির এসব গোয়েন্দা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ না করেই অস্ত্র নিয়ে রোমানিয়া, স্পেন, ইতালি ও বেলজিয়ামের বন্দরে প্রবেশ করেছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ইউরোপে গুপ্তচরবৃত্তি ও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতেই তারা এসব দেশে প্রবেশ করেছে বলে জানা যায়। এর আগে বিভিন্ন সময় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের এ এলিট বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ।
এখন পর্যন্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন, পরমাণু কার্যক্রমে জড়িত থাকা ও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইরানের ২২৭ ব্যক্তি ও ৪২ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। চলতি বছরের মে মাসে রুশ বাহিনী ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইরানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন সরবরাহ, বিক্রয় বা স্থানান্তরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং সংস্থাগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সাধারণত বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে সশস্ত্র রক্ষী মোতায়েন করা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনের পরিপন্থি। এমনটা হলে তাদের কী কারণে অস্ত্র দেওয়া হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষকে আগেই জানাতে হয়। সাধারণত ইউরোপীয় বন্দরগুলোতে সশস্ত্র রক্ষী অনুমোদন দেওয়া হয় না।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের এমন প্রতিবেদনের জবাবে আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা তথা আইএমও জানায়, জাহাজের পতাকাবাহী দেশ তাদের জাহাজের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধান নির্ধারণ করবে এমনকি সেখানে যদি সশস্ত্র রক্ষী প্রয়োজন হয় তা তারাই জানাবে। অন্যদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানায় আগত জাহাজে কী ধরনের নিরাপত্তা থাকবে তা নির্ধারণ করবে।
মন্তব্য করুন