দিন যত গড়াচ্ছে গাজা যুদ্ধ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মাত্রা আরও বাড়ছে। বিশেষ করে মিসর সীমান্তবর্তী রাফাহ শহরে ইসরায়েলি সেনাদের হামলাকে কেন্দ্র করে সংঘাত আঞ্চলিক আকারে রূপ নেওয়ার শঙ্কা বহুগুণে বাড়ছে।
এর মধ্যেই ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আরব দেশ মিসর। তারপরই অস্থিতিশীল উত্তর সীমান্ত থেকেও পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের হুঁশিয়ারি পেল ইসরায়েল। আর পেছনে কলকাঠি নাড়ছে ইরান।
জানা গেছে, গাজার স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবার ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। যদিও গাজা যুদ্ধকে আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ দিতে নিজেদের কোনো ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছিল ইরানপন্থি এ গোষ্ঠীটি।
তবে ইসরায়েল যদি তাদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় তবে কোনো ছাড় দেবে না লেবাননের গোষ্ঠীটি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল যদি উত্তর সীমান্তের একটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ করতে চায় তবে হিজবুল্লাহর যোদ্ধারা তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গোষ্ঠীটির উপপ্রধান শেখ নাইম কাসেম।
এ সময় ইসরায়েলকে বিজয় অর্জনের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন হিজবুল্লাহর এ নেতা।
হিজবুল্লাহ জানায়, লেবাননে যে কোনো ধরনের ইসরায়েলি আগ্রাসন হবে তেলআবিবের জন্য ধ্বংস ডেকে আনা এবং ইসরায়েলি জনগণের জন্য বাস্তুচ্যুতির শিকার হওয়া।
এমনিতেই গেল বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত আছে হিজবুল্লাহ। ফলে যে কোনো মুহূর্তে ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দুই বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
হিজবুল্লাহর এমন বক্তব্যের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসসাম ব্রিগেডের লেবানন ফ্রন্টও। তারা জানায়, গাজার প্রতি পূর্ণ সমর্থনের অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুেদ্ধ যে কোনো অভিযানের জন্য তারা প্রস্তুত।
২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সম্প্রতি দুুই বাহিনীর মধ্যে তিক্ততা আরও বেড়েছে। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর উভয় সীমান্তে ক্রমাগত বোমা বর্ষণের ফলে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কয়েক হাজার ইসরায়েলি ও লেবানিজ নাগরিক।
যদিও উত্তর সীমান্তে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘাত এই মুহূর্তে কোনো টেকসই সমাধান নিয়ে আসবে না বলে মনে করছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। কারণ হিসেবে এ সংঘাতের পেছনে ইরানের ইন্ধনের কথাই বলে আসছেন সামরিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন