সারা বিশ্বের নজর এখন ইরানে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি গত মাসে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা জানার অপেক্ষায় মুখিয়ে আছে বিশ্ব। এরই মধ্যে নতুন নেতা নির্বাচনে তোড়জোড় শুরু করেছে ইরান। রাইসির মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করা ইরানের এক সামরিক কমান্ডার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তেহরানের সক্ষমতার এক নতুন তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন।
চিরশত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রক্সি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইরান। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে প্রথমবারের মতো ইরান থেকে সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়। এতে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে শেষ মুহূর্তে নিজেদের সংযত করে তারা। ইরানের এমন হামলার পর ইসরায়েল তার মিত্রদের অন্তরে কাঁপুনি ধরে যায়। সেই হামলায় ইসরায়েল কতটা ভয় পেয়েছিল তা জানিয়েছেন ইরানের একজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার।
তেরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের অ্যারোস্পেস ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলি হাজিজাদেহ বলেছেন, ইরানের হামলা রুখতে প্রায় ২২১টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছিল ইসরায়েল। তারপরও ইরান থেকে ছোড়া মিসাইল ঠেকাতে ব্যর্থ হয় নেতানিয়াহু প্রশাসন। ইরান ওই অভিযানের নাম দিয়েছিল অপারেশন ট্রু প্রমিজ। ১৩ এপ্রিল চালানো হামলায় ইসরায়েলের অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যুহ ভেদ করতে সক্ষম হয় ইরানি মিসাইল ও ড্রোন।
এর আগে গেল ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের একটি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের কয়েকজন সামরিক কমান্ডার নিহত হয়। হাজিজাদেহ জোর দিয়ে বলেন, ইরানের কূটনৈতিক মিশনে ইসরায়েলের হামলার সিদ্ধান্ত তেল আবিবের বড় ধরনের ভুল হিসাব ছিল। তারা ভেবেছিল ইরান পাল্টা জবাব দেবে না এবং আঞ্চলিক প্রতিরোধ বাহিনী তেহরানের পরিবর্তে পদক্ষেপ নেবে।
তেহরান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অপারেশন ট্রু প্রমিজের সময় ইরান তাদের সামরিক শক্তির মাত্র ’২০ শতাংশ’ ব্যাবহার করেছে। ইসরায়েলের মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমে হামলা করা হয়নি। কেননা সেগুলো বড় শহরের কাছে মোতায়েন করা ছিল। কিন্তু যদি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ত তাহলে তেল আবিবকে গুঁড়িয়ে দিতে খুব বেশি সময় লাগত না তেহরানের, এমন দাবিও করা হয়। ইরানি মিসাইল ও ড্রোনকে ভূপাতিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডান এক হয়ে কাজ করেছে বলেও দাবি করেছেন হাজিজাদেহ।
মন্তব্য করুন