ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে যেন ঘুঘুর ফাঁদে পা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। অবস্থা এখন এমন যে পিঠ বাচাতে যুদ্ধ থামিয়ে দিতে চাইলেও সেই সুযোগ আর নেই। অন্যদিকে হামাসকে হাকলাভাবে নেয়ার করুণ পরিণতিও ভোগ করতে হচ্ছে ধুঁকেধুঁকে। সম্প্রতি গাজা ও মিশর সীমান্তবর্তী ফিলাডেলফি করিডোরের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর হামাসের একটি অস্ত্রভান্ডার দেখে চোখ কপালে উঠেছে ইসরাইলের। যোদ্ধাদের এমন অস্ত্রভান্ডারের সামনে ঠিক কতদিন নিজেদের মনোবল ধরে রাখতে পারবে নেতানিয়াহুর সেনারা তাই এখন বড় প্রশ্ন।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা মনে করছেন- হামাসের হাতে যে অস্ত্রভান্ডার রয়েছে, তা দিয়ে আরও বহু দিন যুদ্ধ করতে পারবে সংগঠনটি। কয়েক দশক ধরে অস্ত্রের বিশাল মজুত গড়ে তুলেছে আল কাসসাম ব্রিগেড। ফলে ফিলাডেলফি করিডোর বন্ধ হলেও, অন্য স্থানে মজুত করা অস্ত্র ব্যবহার করবে হামাস।
ফিলাডেলফি করিডোরের দখল নেয়ার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানান, সেখানে বিশটির মতো টানেল খুঁজে পাওয়া গেছে যা হামাস অস্ত্রের চালান গ্রহণ করার গোপন আস্তানা হিসাবে ব্যবহার করতো। এসব টানেল ব্যবহার করে মিসর থেকে অস্ত্র চোরাচালান করে থাকতো স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা, যদিও এমন দাবি অস্বীকার করেছে মিসর।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের টানেল এবং অস্ত্রের গুদাম এতো বিস্তৃত যে তা খুঁজে বের করা ইসরায়েলি বাহিনীর দজন্য প্রায় অসম্ভব। ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের সবগুলো ব্যাটিলিয়নকে ধ্বংস করার পরও সংগঠনটি আরও মারাত্মক হয়ে উঠার ক্ষমতা রাখে। গাজায় আল কাসসাম ব্রিগেডের প্রতিরোধ হামলাগুলো সেই বাস্তবতার প্রমাণ দেয়।
মধ্যপ্রাচ্যের সামিরক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, হামাস তার সামর্থ্যের পুরোটা কখনো প্রদর্শন করে না। শক্রকে ঘায়েল করতে উপযুক্ত সময়ের জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় থাকে। সেই সঙ্গে বিশেষ বিশেষ অভিযানের সময় তারা তাদের সেরা অস্ত্রগুলো ব্যবহার করে। হামাসের কাছে অস্ত্রশস্ত্রের অভাব নেই। এখনও গাজার বহু এলাকা রয়েছে যা ইসরায়েলি সেনারা ঢুকতেও পারেনি। সেসব স্থানেও অস্ত্রের বড় ভান্ডার রয়েছে।
পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময়ে ধরে অস্ত্র তৈরিতেও প্রশিক্ষণ নিয়েছে হামাস। বেশ কিছু রকম অস্ত্র এখন হামাস নিজেরাই বানাতে পারে। ফলে সংগঠনটির অস্ত্রের অভাব হবে না। সেই সঙ্গে হামাসের কাছে কী পরিমাণ রকেট ও মর্টার রয়েছে, সেটির চিত্রও স্পষ্ট নয়। শুধু ধারণা দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে ইসরাইল, কিন্তু দীর্ঘ সময় যুদ্ধ হলে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে হামাসই।
মন্তব্য করুন