ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রতিদিনই রক্তাক্ত হচ্ছে ফিলিস্তিন। আর পাশে বসে একরকম নির্ভার দিন পার করছে, মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ সৌদি আরব। টন কে টন বোমা ফেলে ইসরায়েল যখন ভৌগোলিকভাবে ফিলিস্তিনকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তখন আগ বাড়িয়ে দেশের পাঠ্যবই থেকে ফিলিস্তিনের নাম মুছে ফেলেছে সৌদি আরব। সম্প্রতি মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদির পাঠ্যবই গুলোতে গত পাঁচ বছরে কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে সেটি নিয়ে বিস্তর এক গবেষণা করেছে ইম্প্যাক্ট-সি নামে একটি ইসরায়েলি এনজিও ও পর্যবেক্ষক সংস্থা। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত সৌদির ৩৭১টি পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে কী কী বাদ দেওয়া হয়েছে, পরিবর্তন করা হয়েছে এবং কোন বিষয়গুলো রাখা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানিয়েছে ইম্প্যাক্ট-সি
সংস্থাটি জানিয়েছে, সৌদির দ্বাদশ শ্রেণির সামাজিক শিক্ষার বইয়ে ‘ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন একটি বর্ণবাদ’ নামের বিষয় ছিল। সেই বইটি ২০২৩ সাল থেকে পড়ানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আরেকটি বই যেটি এখনো পড়ানো হচ্ছে, তবে সেটি থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিনের আন্দোলন বিষয়টি।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ২০২২ সালে পঞ্চম ও নবম শ্রেণির সামাকি শিক্ষা বইয়ে শানচিত্রে ফিলিস্তিনের নাম রাখা হয়েছিল। তবে পরে এটি মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি পাঠ্যবইয়ে ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের কারও নাম নেই।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মানচিত্র থেকে সৌদির সঙ্গে সীমান্ত নেই এমন দেশের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিনও রয়েছে। কিছু জায়গায় সব দেশের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ইসলাম শিক্ষা এবং ভূগোল বই থেকেও প্রাচীন ফিলিস্তিনের মানচিত্র মুছে ফেলা হয়েছে, যা আগে বইয়ে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সবচেয়ে ভয়ংকর যেটি হয়েছে, সৌদির ২০২১ সালের পাঠ্যবইয়ে দখলদার ইসরায়েলকে ‘জায়নিস্ট বা ইহুদিবাদী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালে এটি মুছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাইস্কুলের সামাজিক শিক্ষার বইয়ে ‘ইসরায়েলি শত্রু’ শব্দও দুটি পরিবর্তন করে ‘ইসরায়েলি দখলদার’ করা হয়েছে। আর ‘ইহুদিবাদী’ পরিবর্তন করে করা হয়েছে ‘ইসরায়েলি’।
মন্তব্য করুন