এবার মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ মিসরের সেনা সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের। এতে এক মিসরীয় সেনা নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার (২৭ মে) দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এ গোলাগুলিতে ইসরায়েলি কোনো সেনা হতাহত হয়নি। তবে ঘটনার বিস্তারিত এখনো জানায়নি কোনো পক্ষ। এ ছাড়া এই ঘটনায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও দেওয়া হয়নি।
তবে অসমর্থিত সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট জানিয়েছে, গোলাগুলির জন্য মিসরকে দায়ী করছে ইসরায়েল। তাদের দাবি, রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য প্রথমে গুলি ছুড়ে মিসরীয় সেনারা। এরপর পাল্টা গুলি চালালে একজন মিসরীয় সেনা নিহত হন।
এ ছাড়া আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ নিয়ে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে এসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসারি অবস্থান নিয়েছে মিসর। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোও ইসরায়েলের সমালোচনার মাত্রা তীব্র করেছে। গত ৪৫ বছরের মধ্যে মিসরীয় গণমাধ্যমে ইসরায়েল বিরোধী এত তীব্রতা দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে কিছু দিন ধরে ইসরায়েল ও মিসরের মধ্যে একটা সংঘাত বেধে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
প্রশ্ন হলো মিসর হঠাৎ কেন এতটা আক্রমণাত্মক হলো। তার কারণ হলো- রাফা অভিযান। ইসরায়েল রাফায় অভিযান চালালে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা মিসরের সিনাই উপত্যকায় আশ্রয় নেবেন।
এজন্য মিসরীয় কর্মকর্তারা বলছেন, রাফা অভিযান মানে ১৯৭৯ সালের শান্তি চুক্তি ঝুঁকির মুখে ফেলা। ইতোমধ্যে মিসরের কিছু সরকারি কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করবেন এবং তেল আবিব থেকে তাদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করবেন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনস্যার মিসরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কায়রো তাতে রাজি হয়নি। এর আগে হোসনি মোবারকের আমলে যখন তাবা নিয়ে বিরোধ চাঙ্গা হয়েছিল, তখন ইসরায়েল ও আন্তর্জাতিক অন্য পক্ষগুলো মিসরকে সিনাই উপত্যকা ছেড়ে দেওয়ার চাপ দিয়েছিল। কিন্তু পুরো চাপ ও প্রলোভন উপেক্ষা করেছিলেন হোসনি মোবারক।
চলমান ঘটনাপ্রবাহ মিসরীয় ও ইসরায়েলিদের মধ্যে টানাপড়েন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, মিসর এখন তাদের পক্ষ থেকে শান্তি চুক্তির ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা করতে পারে।
এতে ইসরায়েল যদি মিসরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে মিসরও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবে না।
মন্তব্য করুন