যেমন নেতা, তেমন তার সেনা। বলছি, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কথা। নিজে যেমন একরোখা তেমনি কম যায় না ইসরায়েলি বাহিনীও।
সাত মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে তারা। কিন্তু যুদ্ধে দৃশ্যমান জয় দেখতে না পেয়ে মাথা খারাপ হবার জোগাড় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীসহ নেতানিয়াহু প্রশাসনের। এখন তারই কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে।
নেতানিয়াহু ভেবেছিলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের ট্যাংকের নিচে পিষে মারবেন। কিন্তু তার সেই আশায় গুড়েবালি। উল্টো ঘরের ভেতরে-বাইরে তোপের মুখে আছেন তিনি।
এবার তার সেনাবাহিনীতেও দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একজন সদস্য দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় অভ্যুত্থানের হুমকি দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক সদস্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই ঝামেলা শুরু হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোশ পরা ওই সেনাসদস্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ হারজি হালেভি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার আহ্বান জানাচ্ছে। এরপরই ইসরায়েলে এ নিয়ে হইচই পড়ে যায়।
জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এমন ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর ওই সেনাসদস্যকে হন্যে হয়ে খোঁজা শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। অবশেষে ওই সেনাসদস্যকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় তারা। ওই ব্যক্তি রিজার্ভ ফোর্সের সদস্য। এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ইসরায়েল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ওই সেনাসদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ভিডিও আপনার জন্য। আমরা রিজার্ভিস্টরা ফিলিস্তিনের কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে চাবি দিতে চাই না। গাজার একটি ভবনে ওই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম। দেয়ালে গ্রাফিতি দেখেই এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে তারা।
সেনা অভ্যুত্থানের উসকানি দেওয়া ওই ভিডিও নিজের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন নেতানিয়াহুর ছেলে ইয়ার নেতানিয়াহু। পরে ওই ভিডিওতে মন্তব্য করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ ধরনের যে কোনো কিছুর ব্যাপারে নিজের অনিচ্ছার কথা জানান। তবে নেতানিয়াহু মুখে যা-ই বলুন না কেন এ নিয়ে ইসরায়েলে তোলপাড় চলছে।
এমন এক সময় এই ভিডিও প্রকাশ্যে এলো যখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনি ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভও হচ্ছে দেশে দেশে।
গেল বছরের ৭ অক্টোবরের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার পরই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ভেতরের দুর্বলতা বেরিয়ে পড়ে। আর এখন বিভাজনও প্রকাশ পাচ্ছে।
মন্তব্য করুন