ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। এরই ধারাবাহিকতায় একদিনে তিন জাহাজে হামলার খবর জানিয়েছে তারা। শুক্রবার (২৪ মে) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হুতিদের দাবি- তারা লোহিত সাগর, আরব সাগর ও ভূমধ্যসাগরে ৩টি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে। শুক্রবার এ দাবি করে তারা। যদিও ভূমধ্যসাগরে হামলা করা জাহাজটির ম্যানেজারের দাবি, তারা এমন কোনোকিছু লক্ষ্য করেনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে চালানো জাহাজে হামলার সর্বশেষ ঘটনা এটি। গোষ্ঠীটির দাবি গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা ও হামলা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত হামলা চালিয়ে যাবে তারা।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি টেলিভিশনে বক্তৃতায় বলেন, হুতি যোদ্ধারা লোহিত সাগরে ইয়ানিস নামের একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়া ভূমধ্যসাগরে এসেক্স নামের একটি জাহাজ এবং আরব সাগরে এমএসসি আলেক্সান্দ্রা নামের দুটি জাহাজে হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এসেক্স নামের জাহাজটিতে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। তবে কখন এ হামলা হয়েছে তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
শুক্রবার মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড জানায়, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) হুতিরা লোহিত সাগরে দুটি জাহাজবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শিপিং ডাটা অনুসারে লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এসেক্স মূলত ট্যাঙ্কার। এটি শুক্রবার ভূমধ্যসাগরে মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া বন্দরের উপকূলে নোঙর করা হয়েছিল। জাহাজটি জোডিয়াটিক মেরিটাইমের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছিল। এটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন ইসরায়েলি ম্যাগনেট আইল অফার।
গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে এরই মধ্যে সাড়ে ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হুতিরা বলছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি এবং ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে তারা লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা করে আসছে।
মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ৫০টির বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা।
হুতিদের হামলার জবাবে বেশ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টহল জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই জোট গঠন করেও ইরানপন্থি যোদ্ধাদের থামাতে না পেরে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। তবে হামলা করেও এখন পর্যন্ত তাদের থামাতে পারেনি পশ্চিমারা।
মন্তব্য করুন