ইরানের সদ্যপ্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির রহস্যজনক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা যেন থামছেই না। একের পর এক নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে দুর্ঘটনা-পরবর্তী বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
দুর্ঘটনার দিন তাৎক্ষণিকভাবে ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে ড্রোন ও উদ্ধারকারী দল পাঠায় তুরস্ক। বলা হয় তুরস্কের আকিনচি ড্রোনের মাধ্যমেই শনাক্ত করা হয় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ।
তবে এবার এই উদ্ধার অভিযান নিয়ে সম্পূর্ণ নতুন ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে ইরানের সেনাবাহিনী।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ তুর্কি ড্রোনের মাধ্যমে নয়, শনাক্ত করা হয় ইরানের নিজস্ব ড্রোনের মাধ্যমে।
দেশটির সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার পরপরই তুরস্ক উদ্ধার অভিযানে নিজস্ব ড্রোন পাঠালেও সেটি হেলিকপ্টারের সঠিক অবস্থান শনাক্তে ব্যর্থ হয়। যদিও তুর্কি ড্রোনে নাইট ভিশন ও থার্মাল ইমেজ সেন্সর প্রযুক্তি ছিল।
কিন্তু পর্যাপ্ত শনাক্তকরণ যন্ত্রপাতি ও ঘন মেঘের নিচ থেকে কোনো বস্তুকে নির্দিষ্ট করার ঘাটতি ছিল তুর্কি ড্রোনে।
ইরানি সেনাবাহিনী জানায়, দুর্ঘটনার পরপর ইরানের সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার প্রযুক্তি সম্পন্ন ড্রোনগুলো ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে মোতায়েন করা ছিল। ফলে সে সময় তুর্কি ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হয়।
সোমবার ইরানের গ্রাউন্ড রেসকিউ ফোর্স ও ভারত মহাসাগর থেকে ফিরিয়ে আনা ড্রোনের সাহায্যে পরবর্তীতে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করা হয়।
এসএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে দিন কিংবা রাতে পৃথিবী পৃষ্ঠে থাকা কোনো বস্তু শনাক্তে একটি মাইক্রোওয়েভ সিগন্যাল পাঠানো হয়। ফিরতি সিগন্যালের মাধ্যমে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর টুডি অথবা থ্রিডি ছবি তৈরি করা হয়।
যদিও সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্তে সফল হয়েছিল তুরস্কের তৈরি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আকিনচি ড্রোন। তুর্কি ড্রোনের সফল শনাক্তের পরই ঘটনাস্থলে যায় ইরান রেড ক্রিসেন্ট ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
ড্রোন অভিযান নিয়ে বিতর্ক তৈরি করলেও তুরস্ক, চীন ও রাশিয়ার মতো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোকে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয়ায় ধন্যবাদ জানায় ইরান। ইরানের সেনাবাহিনী জানায়, দুর্ঘটনার পরপরই এসব দেশের কাছে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠানো হয় তেহরানের পক্ষ থেকে।
মন্তব্য করুন