ইরানের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের আকস্মিক মৃত্যুর শোকে পুরো বিশ্ব যখন স্তব্ধ, তখনই ইরানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ কষতে বসেছে শত্রু দেশগুলো।
আলোচনায় আসছে ইরানের সরকার, পররাষ্ট্রনীতি, মধ্যপ্রাচ্যের আধিপত্য, চীন, রাশিয়া কিংবা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়।
এসবের পাশাপাশি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিষয়টি নিয়েও কথা হচ্ছে। রাইসির মৃত্যুতে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়ার যে স্বপ্ন ইরান এতদিন ধরে দেখে আসছে, তা মুখ থুবড়ে পড়বে, নাকি সব বাধা পেছনে ফেলে শত্রুর চোখে চোখ রাঙিয়ে এগিয়ে যাবে তেহরান, এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই ইরানের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।
বিশেষজ্ঞের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, রাইসি ও হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে যারা ভাবছেন ইরানে সরকার পতন কিংবা সরকার বদলে যাবে তাদের আশাহত হতে হবে। তারা দুজন মারা গেলেও শিয়াপ্রধান দেশটিতে তেমন এমন কিছুই হবে না।
রাইচম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরানি প্রভাষক মীর জাভেদানফার বলেছেন, রাইসির মৃত্যু ইরানের সরকার পরিবর্তনে কোনো ভূমিকা রাখবে না। যতটা প্রভাব পড়বে তা তাদের দেশের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের মৃত্যু ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের শত্রুতা, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধরত প্রতিরোধ যোদ্ধাদল হামাস ও হিজবুল্লাহর প্রতি ইরানি সমর্থন বা তেহরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব রাখবে না।
ইসরায়েলের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ড. ইয়াকভ আমিদ্রর বলেন, দিন শেষে সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিই ইরানের নীতি নির্ধারণ করেন।
বহু বছর ধরে পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে ইরান। যদিও তাদের দাবি, ইরানি পরমাণু কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ। এমনকি দুই হাজার দশকের গোড়ার দিকে একটি ফতোয়া জারি করে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ ও উন্নয়নকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন খামেনি।
তবে তেহরান এমনটা দাবি করলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের দাবি, ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইরান যেন পারমাণবিক বোমা বানাতে না পারে সে জন্য দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে ইসরায়েলের মিত্র পশ্চিমারা।
এখন পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে। পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে হয়। ইরানের হাতে থাকা ইউরেনিয়াম আরও সমৃদ্ধ হলে তা দিয়ে তেহরান দুটি পারমাণবিক বোমা বানাতে পারবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ।
মন্তব্য করুন