ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির রহস্যজনক মৃত্যুতে একদিকে যখন শোকের ছায়ায় ভাসছে বিশ্বের একাংশ অন্যদিকে উল্লাসেও ফেটে পড়েছে আরেক অংশ। যেখানে ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী জনগণ, ইসরায়েল-আমেরিকাবিরোধীরা রাইসির মৃত্যুতে অনেকটাই হতভম্ব সেখানে খোদ ইরানে রীতিমতো আতশবাজি ফাটিয়ে উৎসবে মেতেছে ইরানিদের একাংশ।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনায় যখন তেহরান ও মাশহাদের রাস্তায় প্রার্থনার জন্য জড়ো কয়েক হাজার মানুষ তখন কয়েকটি এলাকায় রীতিমতো উৎসব শুরু করে মানুষ। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিয়ে হাস্যরসাত্মক পোস্ট দিতে থাকেন অনেকে।
রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাওয়ার পথে রহস্যজনক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা নিহত হন রাইসি, আমির আব্দুল্লাহিয়ান। এই ঘটনায় ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে দেশটি।
সামাজিক যোগাযোমমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায় তেহরানের এক ব্যক্তি বলছেন, রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের সুখবরটি আসুন উদ্যাপন করি। যদিও এ ধরনের উৎসব বন্ধ করতে এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর সদস্যরা।
ইরানের বিভিন্ন স্থানে রাইসির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উৎসবের কারণ জানাতে গিয়ে সাংবাদিক ও বিশ্লেষক জোনাথন হ্যারনওফ ইরান ইন্টারন্যাশনালকে বলেন, ‘একজন সংরক্ষণশীল নেতা ছিলেন রাইসি। এর পাশাপাশি কঠিন বিচারব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমেই তিনি নিজের আসন পাকাপোক্ত করেছেন। হাজারো বন্দির প্রাণ গেছে তার হাতে। আর এ কারণেই তাকে তেহরানের কসাই ডাকা হয়।’
কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি নিহতের ঘটনা মনে করিয়ে দেন বেশ কয়েকজন নারীবাদী। এ কারণে তারা আজকের দিনটিকে ‘বিশ্ব হেলিকপ্টার দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এ সময় অনেককে নাচতে দেখা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ইরানিদেরও আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এর মধ্যে লন্ডনের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ছাড়া ইরান সরকারের রোষাণলে পড়ে যারা দেশ ছেড়েছেন, তারা উল্লাস করছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, ইব্রাহিম রাইসি ইরানের একজন ধর্মীয় ‘কট্টরপন্থি’ নেতা ছিলেন। ইরানে বাকস্বাধীনতাকে ধ্বংস করা এবং নারীদের জন্য কঠোর ‘হিজাব আইন’ প্রয়োগ করার মতো পদক্ষেপ নেওয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
মন্তব্য করুন