গাজায় হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্তি ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ইসরায়েলজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। এ সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ও অন্যান্য কয়েকটি শহরে পুলিশের সঙ্গে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষও ঘটেছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় আটক সব জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে শনিবার (১১ মে) ইসরায়েলের কয়েকটি শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি। তারা নেতানিয়াহুর পদত্যাগ এবং আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।
তেল আবিব ছাড়াও সিজারিয়া, রেহোভোত এবং হাইফাসহ অন্যান্য শহরে এসব সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে গাজায় জিম্মিদের পরিবার। ইসরায়েলের ‘মেমোরিয়াল ডে’ পালনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় এই বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে ইসরায়েলি পতাকা এবং গাজায় আটক জিম্মিদের ছবি সংবলিত ব্যানার দেখা যায়। বিক্ষোভকারীরা জিম্মিদের জীবিত ফেরত আনতে ইসরায়েলের সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
গেল বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ২৪০ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস। হামাসের আকস্মিক ওই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। পরে ওই দিনই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
গত নভেম্বরে কয়েক দফার যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ১০০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছে, গাজায় হামাসের হাতে এখনো প্রায় ১৩২ জন জিম্মি রয়েছেন। এদের মধ্যে মাত্র ৯২ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
শনিবারের বিক্ষোভে নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরোধিতায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করে তারা বলেছেন, কেবল নেতানিয়াহুর কারণে জিম্মি চুক্তি হচ্ছে না। তিনি কেবল জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে বাধা দিচ্ছেন না, বরং তিনি ইসরায়েলকে সাফল্যও পেতে দিচ্ছেন না। হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের মুক্ত করতে আমাদের নিজেকে নেতানিয়াহুর কাছ থেকে মুক্ত হতে হবে।
মন্তব্য করুন