ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যাকায় সাত মাস ধরে অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি সেনারা। দীর্ঘ এ যুদ্ধের পর গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। এতে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। সোমবার (০৬ মে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস যে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এ যুদ্ধবিরতি তিন ধাপে কার্যকর হতে পারে। যার প্রতিকবারের মেয়াদ হবে ৪২ দিন।
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরায়েল নিজেদের নেটজারিম করিডোর থেকে প্রত্যাহার করে নিবে। এ জায়গাটি গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলকে আলাদা করেছে।
যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে গাজায় সামরিক অভিযানের স্থায়ীভাবে বন্ধের অনুমোদন করবে ইসরায়েল। এ ছাড়া একই সময়ে উপত্যকার থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেবে তারা।
এ ছাড়া প্রস্তাবের তৃতীয় ধাপে গাজা অবরোধের অবসানের করবে ইসরায়েল।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চুক্তির প্রথম ধাপেই গাজা পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। এ সময়ে উপত্যকায় সড়ক, বিদ্যুৎ, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং যোগাযোগ অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ করা হবে। দ্বিতীয় দফায় গাজার বাড়িঘর ও বেসামরিক স্থাপনা পুর্নগঠনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হবে। এ ছাড়া তৃতীয় ধাপে অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা হবে
এর আগে প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা মিসর ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চিত করা হয়েছে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে। এক বিবৃতিতে প্রতিরোধ সংগঠনটি জানায়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারি প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি এবং মিসরের গোয়েন্দা মন্ত্রী আব্বাস কামেলের সঙ্গে এক ফোনালাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানান।
হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হওয়া নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন আগেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন হোক বা না হোক তেলআবিব ফিলিস্তিনের সীমান্তবর্তী শহর রাফাহতে স্থল অভিযানের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন