নিজেদের মুখ রক্ষায় মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া ছাড়া যেন কোনো গতি নেই ইসরায়েলের। গাজায় নিজেদের বন্দিদের উদ্ধারে পুরো উপত্যকা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলেও লক্ষ্য হাসিলের ধারেকাছেও নেই নেতানিয়াহুর সেনারা। এর মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে উঠেছে খোদ ইসরায়েলি বন্দিদের হত্যার অভিযোগ, আর সেই অভিযোগ ধামাচাপা দিতে দোষ চাপানো হচ্ছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ওপর। তেমনি এক অভিযোগের নগ্ন সত্য উঠে এলো ইসরায়েলি এক মায়ের অনুসন্ধানে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে ওঠে আসে ইসরায়েলের মিথ্যাচারে গল্প। সেখানে বলা হয়, গেল বছরের শেষ দিকে গাজার একটি টানেল থেকে ১৯ বছর বয়সী ইসরায়েলি সামরিক বন্দি রন শ্যারমেনের মরদেহ উদ্ধার করে ইসরায়েলি কমান্ডোরা। সে সময় তার মাকে বলা হয় রন শ্যারমেনকে হামাস যোদ্ধারা হত্যা করেছে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পর প্যাথলজিস্টের রিপোর্টে দেখা যায়, নিহত রন শ্যারমেনের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, তখনই তার মায়ের সন্দেহ তৈরি হয় ছেলের মৃত্যু নিয়ে।
রন শ্যারমেনের মতো আরেক বন্দি নিক বেইজার একই সময়ে এই জায়গায় মারা যান। হামাস যোদ্ধারা তাদের গাজার উত্তরে অবস্থিত একটি ছোট সামরিক ঘাঁটি থেকে আটক করে। রন শ্যারমেনের মা মায়ান শ্যারমান ও নিক বেইজারের মা কাটিয়া বেইজার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারেননি। তারা হামাসের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বিশ্লেষণ করতে শুরু করেন এবং ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে তারা জিম্মিবিষয়ক সামরিক গোয়েন্দা প্রধান, অন্যান্য সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা এবং এমনকি রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও বৈঠক করেন।
এ সময় দুই ঊর্ধ্বতন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, নভেম্বরে হামাসের এক কমান্ডারকে লক্ষ্য করে চালানো বিমান হামলায় তাদের ছেলেরা নিহত হয়। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কখনোই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি যে, গত নভেম্বরে উত্তর গাজায় তাদের চালানো বিমান হামলায় এসব ইসরায়েলি বন্দি নিহত হয়েছে।
সন্তানদের মৃত্যুর কারণ জানার জন্য সেনাবাহিনীর ওপর কয়েক সপ্তাহ চাপ প্রয়োগের পর ঊর্ধ্বতন দুই ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা তাদের জানান, একটি টানেলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ব্যবহৃত বোমা বিস্ফোরণের ফলে নির্গত গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় বন্দিরা দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে। এছাড়াও মৃত্যুর কারণ সংক্রান্ত মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর শেরম্যান ভেবেছিলেন সামরিক বাহিনী শেষ পর্যন্ত নিজেদের ভুল স্বীকার করবে। তবে জনসমক্ষে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলতে থাকেন যে, সৈন্যদের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন