গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের জীবনের কোনো মূল্যই দিতে চাইছে না নেতানিয়াহু প্রশাসন। বরং গাজায় থাকা প্রতিটি প্রাণ নিশ্চিহ্ন করে হলেও স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের নির্মূল করাটা এখন প্রধান লক্ষ্য হয়ে উঠেছে।
এমন পরিস্থিতিতে হুমকিতে পড়েছে যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির ভবিষ্যৎ। সেই সঙ্গে হুমকিতে রয়েছে নেতানিয়াহুর সরকারও। বলা হচ্ছে যে কোনো মুহূর্তে ইসরায়েল সরকার ভেঙে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে তেলআবিব।
হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির সম্ভাবনার মধ্যেই মিসর সীমান্তবর্তী দক্ষিণ গাজার রাফাহ রাফাহ শহরে স্থল অভিযান চালানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েল সরকারের এ নেতা জানান প্রতিরক্ষা বাহিনী রাফাহতে প্রবেশ করবে এবং সেখানে থাকা হামাসের প্রতিটি ব্যাটিলিয়নকে ধ্বংস করবে। এতে বন্দিবিনিময় চুক্তির সফলতা বা ব্যর্থতা কোনো প্রভাব ফেলবে না।
এর আগে তেলআবিবের পক্ষ থেকে জানানো হয় হামাস সবশেষ যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তিতে সম্মত হলে ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহতে প্রবেশ করবে না। এ চুক্তির আওতায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ২০-২৩ জন ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির বিনিময়ে অন্তত এক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এমনটা জানা যায়।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলো নেতানিয়াহু এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবিকে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে হামাসের সামরিক ও শাসনক্ষমতা ধ্বংস করে এবং সমস্ত জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা পর্যন্ত গাজা যুদ্ধ বন্ধ না করার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন গাভির জানান, তিনি নেতানিয়াহুকে যুদ্ধ বন্ধ না করতে এবং হামাসের সঙ্গে বিপজ্জনক চুক্তিতে সম্মত না হতে সতর্ক করেছেন এবং সরকার ভেঙে যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। এ সময় নেতানিয়াহু রাফাহতে স্থল অভিযান পরিচালনা করবে বলে কথা দিয়েছেন বলেও জানান উগ্র ডানপন্থি এ মন্ত্রী।
অন্যদিকে ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী স্মোরিচ হুমকি দিয়েছেন, যদি রাফাহতে হামলা চালানো না হয় এবং যুদ্ধ বন্ধ করে দেদয়া হয় তাহলে সরকার ভেঙে দেওয়া হবে।
গেল শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিউস জানায়, হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল। এর পরই চুক্তির একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে ইসরায়েলি উগ্র ডানপন্থি মন্ত্রীদের বিরোধিতায় এ সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন