গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করে আনতে ক্রমেই চাপ বাড়ছে নেতানিয়াহু প্রশাসনের ওপর। অন্যদিকে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি-আমেরিকান নাগরিকদের মুক্ত করতেও বেশ তৎপর মার্কিন প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির জন্য মরিয়া হয়ে আছে পশ্চিমা শক্তিগুলো, যার জন্য মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর ওপর চাপও বাড়াচ্ছে পশ্চিমা জোট। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এসব চাপের কোনো মূল্যই নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে গাজার স্বাধীনতাকামী দলটি।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি তাদের কোনো বন্দিকে ফিরিয়ে নিতে চায় তাহলে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো শর্তই মানা হবে না। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের চাপেও কোনো কাজ হবে না। হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কোনো মূল্য হামাসের কাছে নেই।
গেল বুধবার হার্স গোল্ডবার্গ-পোলিন নামের এক ইসরায়েলি-আমেরিকান বন্দির ভিডিও প্রকাশ করে হামাস। এরপর বন্দিদের ছেড়ে দিতে হামাসের ওপর চাপপ্রয়োগ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই বৃহস্পতিবার ১৮টি দেশের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর বাইডেনের এমন বিবৃতির পরই হামাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কোনো মূল্যই তাদের কাছে নেই।
এদিকে হামাসের আরেক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন সংগঠনটি কমপক্ষে পাঁচ বছরের জন্য অস্ত্রবিরতি দিতে প্রস্তুত হামাস। এমনকি সশস্ত্র শাখা বিলুপ্ত করে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক দল হিসেবেও কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রস্তুত। তবে শর্ত হলো— ইসরায়েলকে ১৯৬৭ সালের সীমানা ধরে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা মেনে নিতে হবে। ইস্তাম্বুলে মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের উপপ্রধান খলিল আল-হাইয়্যার এসব কথা বলেন।
আল-হাইয়্যা যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হামাসের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। হামাসের এ নেতা জানান, হামাস গাজা ও পশ্চিম তীরে একটি ঐক্যবদ্ধ সরকার গঠনে প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহের নেতৃত্বে পরিচালিত প্যালেস্টাইন লিবারেশন অরগানাইজেশন বা পিএলওতে যোগ দিতে চায়।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর ইস্তাম্বুলভিত্তিক সদস্য বাসেম নাইম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, জেরুজালেমকে রাজধানী করে যদি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের দেশে ফিরে আসার অধিকার দেওয়া হয় তবে হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেডকে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনের জাতীয় সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
মন্তব্য করুন