ইরান ও ইসরায়েলকে নিয়ে মহাবিপদে পড়েছে জর্ডান। দেশ দুটির মধ্যে যদি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ বেধে যায়, জর্ডান তাহলে বড় সংকটে পড়তে পারে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনির্ভাসিটির জর্ডান–বিশেষজ্ঞ সেন ইয়োম। তিনি বলেন, জর্ডানকে খোলাখুলিভাবে এই ঝঞ্ঝাটের বাইরে থাকতে হবে। যুদ্ধে কোনো এক পক্ষের সঙ্গে হাত মেলালেই বিপদ।
আমেরিকা ও ইসরায়েলের সাথে জর্ডানের রয়েছে কৌশলগত সম্পর্ক। গাজায় ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা এবং তাতে ওয়াশিংটনের সমর্থনের পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ছেন জর্ডানের মানুষ। বিক্ষোভকারীদের দাবি— আম্মানকে অবশ্যই দেশ দুটির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি গভীর সহানুভূতি রয়েছে জর্ডানের বাসিন্দাদের। দেশটিতে আনুমানিক ২০ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির জনসংখ্যার বড় একটি অংশ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত। এমন পরিস্থিতিতে ১৩ এপ্রিল রাতে ইরানের ড্রোন ধ্বংসের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়েছেন।
জর্ডানের পদক্ষেপে প্রথম দিকে চটেছিল তেহরানও। জানিয়েছিল, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের চালানো কোনো অভিযানে নাক গলালে জর্ডানকেও ভবিষ্যতে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে। তবে, দ্রুতই নিজেদের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেয় দুই দেশ।
মধ্যপ্রাচ্যে বড় পরিসরে যুদ্ধ বাধলে জর্ডানও এর শিকার হতে পারে বলে মনে করেন সেন ইয়োম। তিনি বলেন, যুদ্ধ বাধলে দেশটির অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া পর্যটন খাতে আয় কমে গিয়ে এবং বাণিজ্য হ্রাস পেয়ে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে।
জর্ডানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে দেশটির রাজতন্ত্র চাপে রয়েছে। এমনকি ৭ অক্টোবরের আগেও দেশটির ভেতরে ও সীমান্তে বহু চ্যালেঞ্জ ছিল। জর্ডানের সাবেক মন্ত্রী ও ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইব্রাহিম সাইফ বলেন, করোনার পর জর্ডানের অর্থনীতি ধীরে ধীরে চাঙা হচ্ছিল। তবে সাম্প্রতিক যুদ্ধে তা বড় ধাক্কা খেয়েছে।
এখন সবার নজর গাজার দক্ষিণে সীমান্তবর্তী রাফা এলাকায়। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। তাদের আশঙ্কা, খুব শিগগিরই হয়তো রাফায় স্থল অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েলি বাহিনী। এমনটা হলে জর্ডানের বিক্ষোভকারীরা আবার রাজপথে নামতে পারেন।
মন্তব্য করুন