সব আশঙ্কাকে সত্যি করে দিয়ে অবশেষে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু ও সামরিক ঘাঁটির শহরে এসব হামলা চালানো হয়।
গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরই পাল্টা হামলার হুমকি দেয় নেহতানিয়াহু প্রশাসন। যদিও বৃহত্তর সংঘাত এড়াতে এমন আচরণ না করতে অনুরোধ করে পশ্চিমা দেশগুলো। শেষ পর্যন্ত সেই অনুরোধ রাখেনি তেলআবিব।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন সিনেটরের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর দেওয়া হয়। এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনও ইস্ফাহানে বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তেহরান, ইস্ফাহাস, সিরাজসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। সক্রিয় করা হয়েছে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও।
ইরানের মহাকাশ সংস্থার একজন মুখপাত্রের বরাতে কাতারি সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ছোট ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত চলমান এ হামলায় ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এমনকি পাল্টা এ হামলার দায়ও স্বীকার করেনি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
ইরানের ইস্ফাহান শহরটিকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শহরটিতে সামরিক গবেষণা ও উন্নয়নের সাইট এবং ঘাঁটিসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। এ ছাড়া নিকটবর্তী নাতাঞ্জ শহরে ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ সাইটগুলোর অবস্থান রয়েছে।
এদিকে শনিবার রাতে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলে ইরানের হামলার প্রতিশোধ নিতে নানান ছক কষছে পশ্চিমাদের ভরকেন্দ্র আমেরিকা। এরই মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে- ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার পর তারা এখন ইরানের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের দিকে নজর দিচ্ছে।
ইসরায়েল অবশ্য ইতোমধ্যেই তার মিত্রদের প্রতি তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। মূলত ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ গত বছরের অক্টোবরে শেষ হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলো ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার জন্য। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে এবং বিভিন্ন সময়ে নতুন নিষেধাজ্ঞাও যুক্ত করে।
মন্তব্য করুন