ইসরায়েল পাল্টা কোনো হামলা চালালে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে ইরান। সেই পদক্ষেপ হবে আরও কঠোর ও ভয়াবহ।
এমন হুংকার দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি। দেশটির অন্যতম বার্তা সংস্থা আইএসএনএ ও এবিসি নিউজ এ খবর প্রকাশ করে।
প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এক বিবৃতিতে বলেন, ইরান মনে করে ইসরায়েলকে একটি উচিত শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের স্বার্থের ওপর যে কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানো হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ, যা ইরানের আত্মরক্ষার বৈধ অধিকারের আওতায় পড়ে। আমাদের দেশের স্বার্থের ওপর ইসরায়েলি আক্রমণের প্রতিক্রিয়া এটি।’ এ সময় আবার আক্রান্ত হলে যে কোনো পদক্ষেপের জন্য ইরান প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে কথা বলেছেন ইব্রাহিম রাইসি। তিনি তখন বলেন, ‘ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে যে কোনো অপরাধীর ন্যূনতম পদক্ষেপ অবশ্যই কঠোর, বিস্তৃত এবং বেদনাদায়ক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে।’
অপরদিকে উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি বলেন, ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায় তবে ইরানের প্রতিক্রিয়ার গতি হবে কয়েক সেকেন্ডেরও কম।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে নিজেদের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। গত শনিবার রাতের এ হামলায় শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে দেশটি।
ইরানের নজিরবিহীন হামলার জবাব দিতে দেশটির ওপর সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। সোমবার (১৫ এপ্রিল) ইসরায়েলি স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু। এতে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ইসরায়েলের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার জবাবে একের পর এক হুংকার দিচ্ছে ইরান।
সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান বলেছেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাব দেবে তার দেশ। যদিও মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যুদ্ধ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্ররা জবাব দেওয়া থেকে বিরত থাকতে তেল আবিবকে চাপ দিয়ে আসছে।
এদিকে নিজেদের পরবর্তী পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান (চিফ অব স্টাফ) মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাগেরি। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মোহাম্মদ বাগেরি বলেন, ইসরায়েল যদি এ হামলার জবাব না দেয় তাহলে দেশটিতে আর হামলা পরিকল্পনা নেই ইরানের। ইসরায়েলের যেসব লক্ষ্যে হামলা চালানো হয়েছে তার সবই পূরণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের কোনো বেসামরিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যবস্তুতে ইরান হামলা চালায়নি। দেশটিতে হামলায় কেবল সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়েছে। হেরমন পর্বতে ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা ঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ইরানের হামলায় ইসরায়েলের এ ঘাঁটি দুটিই উল্লেখযোগ্যভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং সেগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। শনিবারের হামলার চেয়ে ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী হামলা চালাতে তেহরান সক্ষম বলেও দাবি করেন তিনি।
মন্তব্য করুন