ইসরায়েলের মাটিতে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডেকেছেন ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। আগামী মঙ্গলবার তারা এ বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বেরেল এ জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে জোসেপ বেরেল লিখেছেন, ওই অঞ্চলে উত্তেজনা প্রশমনে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যাতে অবদান রাখতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতোমধ্যেই এই সংকট নিয়ে আলোচনা করতে জি-সেভেন জোটের বৈঠক ডেকেছেন। এখন কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমাধান খোঁজার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নও তৎপর হয়েছে।
রোববার রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় ইরান ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে।
শনিবার রাতের এই হামলাকে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে সীমিত ও নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।
মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রোববার রাতে ইসরায়েলজুড়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান।
এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।
মন্তব্য করুন