ইসরায়েলে ইরানের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করলে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে আরও বড় আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে ইরান বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করা উচিত নয় যুক্তরাষ্ট্রের।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, যদি ইহুদিবাদী শাসক (ইসরায়েল) বা তার সমর্থকরা বেপরোয়া আচরণ প্রদর্শন করে, তাহলে তারা আরও ব্যাপক এবং শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখতে পাবে।
এর আগে একই ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন ইরানের সামরিক প্রধান, মেজর-জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি। তিনি দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়, তারা যদি ইরানে হামলা করে তবে তাদের জন্য আরও ‘অনেক বড়’ প্রতিক্রিয়া অপেক্ষা করছে।
জেনারেল বাঘেরি বলেন, ইসরায়েলের ওপর ইরানের আক্রমণ তার সমস্ত লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং আমাদের দৃষ্টিতে অপারেশনটি শেষ হয়েছে।
এর আগে রবিবার, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছিলেন, ইসরায়েলে প্রতিশোধ নেবে ইরান এবং এতে যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নেয় তাহলে মার্কিন ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হবে।
মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রোববার রাতে ইসরায়েলজুড়ে ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে।
শনিবার রাতের এই হামলাকে ‘অপারেশন ট্রু প্রোমিজ’ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে সীমিত ও নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।
এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।
মন্তব্য করুন