নিজেদের ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, ইরানের এই নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে মুসলিম দেশ জর্ডান। খবর আলজাজিরার।
ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তেহরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাবে এই হামলা চালাল ইরান।
আইআরজিসি জানিয়েছে, তারা ‘ট্রু প্রমিজ’ অপারেশনের অধীনে শনিবার এ হামলা চালিয়েছে। এটিকে ইসরায়েলের কৃত অপরাধের শাস্তি হিসেবে উল্লেখে করেছে তেহরান।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের এই হামলা প্রতিরোধে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের সঙ্গে যুদ্ধ ময়দানে প্রকাশ্যে যুক্ত হয়েছে মুসলিম দেশ জর্ডানও। তারা কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলের দিকে হামলা চালাতে উত্তর ও মধ্য জর্ডানের ওপর দিয়ে নিক্ষেপ করা কয়েক ডজন ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করেছে জর্ডান। মূলত জর্ডানের যুদ্ধবিমানগুলো ইরানের নিক্ষেপ করা এসব ড্রোনগুলো গুলি করে ভূপাতিত করেছে। এ ছাড়া অন্য ড্রোনগুলোকে ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের কাছে আটকে দেওয়া হয় বলেও জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
এদিকে, ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা ফারস দেশটির একটি সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তেহরানের প্রতিশোধমূলক হামলার সময় ইসরায়েলের সমর্থনে যে কোনো পদক্ষেপের জন্য জর্ডানকে নজরে রাখছে ইরান। এমনকি দেশটি (জর্ডান) ‘পরবর্তী লক্ষ্যবস্তু’ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে তেহরান।
ফারস জানিয়েছে, ইসরায়েলে শাস্তিমূলক আক্রমণের সময় জর্ডানের গতিবিধি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইরান। যদি তারা ইসরায়েলকে সমর্থন করার জন্য সম্ভাব্য কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয় তাহলে তারা (জর্ডান) পরবর্তী টার্গেট হতে পারে।
এর আগে, শনিবার আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য ১০০-এর বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে। যেকোনো সময় এ অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে।
অন্য এক খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা ধারণা করছেন, হামলায় ইরান ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ইরান যদি ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তাহলে এটি ঠেকানো ইসরাইলের জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ হয়ে যাবে।
প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে ইরান।
মন্তব্য করুন