বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট হরমুজ প্রণালি থেকে ইসরায়েলের একটি বিশালাকৃতির কার্গো জাহাজ ধরে নিয়ে গেছে ইরানের চৌকস বাহিনী বিপ্লবী গার্ডের নৌ-কমান্ডোরা। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, শনিবার এমএসসি এআরআইইএস নামের জাহাজটি জব্দ করেন বিপ্লবী গার্ডের সেনারা। ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জাহাজটি জোডিয়াক মেরিটাইম শিপিং কোম্পানির। এই কোম্পানিটির মালিক হলেন ইসরায়েলের ধনকুবের ইয়াল ওফার। জাহাজটি পর্তুগালের পতাকাবাহী ছিল। হরমুজ প্রণালি থেকে জব্দ করার পর জাহাজটি এখন ইরানের সমুদ্রসীমায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যুদ্ধ পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান ওয়ার মনিটরও জাহাজ দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানানো হয়েছে, হরমুজ প্রণালির কাছ থেকে ইরানের সেনারা এমএসসি এআরআইইএস নামের জাহাজটি দখলে নিয়েছে।
️Iranian forces took over an Israeli ship named "MCS ARIES" near the Strait of Hormuz pic.twitter.com/5nmXTOBUwd — War Monitor (@WarMonitors) April 13, 2024
মধ্যপ্রাচ্যের এক সামরিক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা এপিকে এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও পাঠিয়েছেন। সেটিতে দেখা গেছে, বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডোরা হেলিকপ্টার নিয়ে জাহাজটিতে নামছেন। ভিডিওতে জাহাজটির এক ক্রুকে বলতে শোনা যায়, ‘কেউ বাইরে যাবেন না।’ পরে তিনি সবাইকে জাহাজের ব্রিজে যাওয়ার জন্য বলেন।
ভিডিওটিতে আরও দেখা যায়, বিপ্লবী গার্ডের এক কমান্ডো হাঁটু গেড়ে বসে অন্যদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। ওই সময় হেলিকপ্টার থেকে অন্য আরও কমান্ডোরা নেমে আসেন।
জাহাজটি শুক্রবার দুবাইয়ে ছিল। শনিবার এটি হরমুজ প্রণালিতে আসে। ওই সময় জাহাজটি ট্র্যাকিং ডাটা বন্ধ করা ছিল। নিরাপত্তার জন্য গালফ অঞ্চল দিয়ে চলাচল করা সব ইসরায়েলি জাহাজ গত কয়েক দিন ধরে ট্র্যাকিং ডাটা বন্ধ করে চলছে। তবে পার পাচ্ছে না।
মূলত সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের হামলার পর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয় তেহরান। এরপর থেকে চরম আতঙ্কে আছে ইসরায়েল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ইরান ইসরায়েলে শতাধিক ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারে। এ অবস্থায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নানা ধরনের জল্পনা প্রকাশিত হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারকে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইরানের এই ক্ষেপণাস্ত্র বহরে রয়েছে ভয়ংকর ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র, যা ইসরায়েল এবং তাদের পশ্চিমা মিত্রদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুধু তাই নয়, ইসরায়েলের হামলা চালাতে সক্ষম এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইরানের হাতে রয়েছে শক্তিশালী সামরিক ড্রোনের বহর। এর মধ্যে মুহাজির-১০ ড্রোন দিয়ে ৩০০ কেজি বোমা বহন করে ২ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা যায়। এই ড্রোনটি টানা ২৪ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। শুধু তাই নয়, নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি শব্দের চেয়ে ৫ গুণ দ্রুতগতি সম্পন্ন হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে তেহরানের হাতে।
মন্তব্য করুন