পরমাণু শক্তিধর চীন ও রাশিয়ার পাশাপাশি পশ্চিমাদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার মতো একমাত্র শক্তি ইরান। গত কয়েক দশকে দেশটির সামরিক সক্ষমতা চোখ রাঙিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলসহ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন স্বার্থকে।
বিশেষ করে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, স্বল্পমূল্যের সামরিক ড্রোনের বহর পশ্চিমাদের কপালে বেশ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ইসরায়েলের ঘাড়ে যখন বিপদ নিঃশ্বাস ফেলছে তখন ঠিক এই মুহূর্তে ইরানের হাতে ক্ষেপণাস্ত্রের কী পরিমাণ মজুত রয়েছে তাও প্রশ্ন তুলেছে পশ্চিমা গোয়েন্দাদের মনে। তেমনি একটি প্রশ্নের উত্তর উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিষেবা দপ্তরের তথ্য বলছে মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত রয়েছে তেহরানের হাতে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ইসনার প্রতিবেদন অনুসারে ইরানের হাতে অন্তত এমন ৯ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা দিয়ে সরাসরি ইসরায়েলের হামলা চালানো যাবে।
ইসরায়েলের হামলা চালাতে সক্ষম এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে শেজিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রতি ঘণ্টায় ১৭ হাজার কিলোমিটারের বেশি গতিতে আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র ২ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে, হাজি কাসেম ক্ষেপণাস্ত্র ১ হাজার ৪শ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
ইরানের হাতে রয়েছে শক্তিশালী সামরিক ড্রোনের বহর। এর মধ্যে মুহাজির-১০ ড্রোন দিয়ে ৩০০ কেজি বোমা বহন করে ২ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা সম্ভব। এ ড্রোনটি টানা ২৪ ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে বলেও জানা যায়। গেল বছরের জুনে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি শব্দের চেয়ে ৫ গুণ দ্রুতগতি সম্পন্ন হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে ইরান।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান দ্য আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ইরান মূলত উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার নকশা অনুযায়ী এবং চীনের সহযোগিতায় নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন করে যাচ্ছে।
সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ইরানের হাতে থাকা স্বল্প ও মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে শাহাব-১ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৩০০ কিলোমিটার, জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৭০০ কিলোমিটার, শাহাব-৩ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৮০০-১ হাজার কিলোমিটার, উন্নয়নাধীন এমাদ-১ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা সর্বোচ্চ ২ হাজার কিলোমিটার ও উন্নয়নাধীন শেজিল ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা আড়াই হাজার কিলোমিটার।
শক্তিশালী এসব ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি তেহরানের কাছে পরমাণু ওয়ারহেড বহনে সক্ষম কেএইচ-৫৫ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যা অন্তত ৩ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এ ছাড়াও দেশটির হাতে ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার জাহাজ বিধ্বংসী উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র খালিদ ফারাজ রয়েছে যা অন্তত ১ হাজার কেজি ওয়ারহেড বহনে সক্ষম।
মন্তব্য করুন