ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হতে চলেছে। আজ রোববার মিসরের রাজধানী কায়রোতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে পরোক্ষ এই আলোচনা শুরু হবে। গতকাল শনিবার (৩০ মার্চ) মিসরীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে আলজাজিরা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে প্রথমবারের মতো একটি প্রস্তাব পাসের কয়েকদিন পর আবারও দুপক্ষ আলোচনায় বসছে। এ ছাড়া গাজায় বন্দিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জোরদারের পরিপ্রেক্ষিতে এই খবর দিল মিসরের আল কাহেরা টিভি চ্যানেল।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে ১৩০ জনের মতো বন্দি আছেন।
বর্তমানে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে নতুন আরেকটি চুক্তি সম্পাদনে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এবারের আলোচনার মূল লক্ষ্য গাজায় যুদ্ধবিরত এবং হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া এই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, রোববার কায়রো আলোচনায় একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে ইসরায়েল। তবে হামাসের এক কর্মকর্তা অবশ্য রয়টার্সকে বলেছেন, প্রথমে ইসরায়েলের সাথে আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে কায়রোর মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে শোনার অপেক্ষা করবেন তারা।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি আলোচনাকারী দলকে কায়রো ও দোহা উভয়ের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে দেখা করার অনুমতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। একই সঙ্গে তাদের সাথে আলোচনা করার জন্য একটি আদেশ দিয়েছেন তিনি।
আলজাজিরার সাংবাদিক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো মধ্যস্থতাকারীরা একটি চুক্তির বিষয়ে আশাবাদী। তারা বলছেন দুপক্ষের মাঝে একটি চুক্তি হতে পারে। তবে এখনো তাদের মাঝে কিছু বিষয় রয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে যে কোনো ধরনের চুক্তির বিনিময়ে হামাস চাইছে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার। অন্যদিকে এমন সম্ভবনা উড়িয়ে দিয়ে ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি বিরতি হলেও হামাসকে পরাজিত না করা পর্যন্ত তারা থামবে না।
মন্তব্য করুন