রোজা থেকে নিজের বীরত্ব দেখিয়েছেন এক মুসলিম নারী। অংশ নিয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন শক্তির খেলায়। এমনকি শেষ করেছেন প্রতিযোগিতার ধাপগুলোও। অবিশ্বাস্য হলেও রোজার মধ্যেই সমাপ্ত করেছেন চ্যালেঞ্জিং সব পর্ব। শনিবার (৩০ মার্চ) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোজা থেকে নিজের বীরত্ব দেখানো ওই মুসলিম নারীর নাম ফাতেমা এলগাজার। তিনি মিসরীয় ভার উত্তোলক। বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন শক্তির খেলায় অংশ নিয়ে তিনি কেবল শারীরিক শক্তি দেখাননি, নিজের মানসিক সক্ষমতারও প্রমাণ দিয়েছেন। রোজা থেকে তিনি ওয়ার্ল্ড স্ট্রংম্যান চ্যাম্পিয়নশিপ সম্পন্ন করেছেন।
দুবাইয়ের আমিরাত স্পোর্টস হোটেলে বৃহস্পতিবার এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হেভিওয়েট অ্যাথলেটরা। তারা সেখানে নিজেদের সুপার পাওয়ারও দেখিয়েছেন।
ফাতেমা নারী বিভাগের আন্ডার ৭৫ কেজিতে অংশ নেন। তার বিরুদ্ধে ভারত, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার ভার উত্তোলকরা অংশ নিয়েছেন। প্রতিযোগীতার নারীদের পুরুষ প্রতিযোগিদের মতো তিনটি ধাপে অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ৬০ কেজি ওজনের লগ উঁচু করতে হয়। প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী এজন্য তিনবার সুযোগ পান প্রতিযোগীরা।
এছাড়া তাদের ১৪০ কেজির এক্সেল তোলা ও এক হাতে শরীর সোজা রেখে ৩৫ কেজি ওজনের ডাম্বল তোলা এবং ৭০ কেজির পাথর ১১০ সেন্টিমিটার তুলতে হয়। সবটির জন্য একজন প্রতিযোগী তিনবার করে সুযোগ পান। এছাড়া প্রথম ধাপ শেষ করার জন্য সময় দেওয়া হয় মাত্র দুই মিনিট।
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ধাপে ৮০ কেজির বালুর ব্যাগ ১৫ মিটার বহন, ২০০ কেজির বোঝা কাঁধে নিয়ে ১৫ মিটার দৌড় এবং এবং ১৫০ কেজির ওজন নিয়ে ১৫ মিটার হাঁটতে হয়। আর সবটি করার জন্য সময় থাকে মাত্র এক মিনিট। তবে ফাতেমা এগুলো শেষ করেছেন মাত্র ৪০ সেকেন্ডে। এছাড়া প্রতিযোগিতার তৃতীয় ধাপ ছিল রোয়িং মেশিনে ৫০০ বার লিভার টানার শর্ত।
মুসলিম এ ভার উত্তোলক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে কেবল নিজের দৃঢ়তা দেখাননি, বরং তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন যে মুসলিমরা রমজানের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সিয়াম সাধনার পরও এমন শক্তির খেলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।
রোজা থেকে এমন চ্যালেঞ্জিং সব পর্ব অতিক্রম করার সময় বিরতিতে খালিজ টাইমসের সঙ্গে কথা বলেছেন ফাতেমা এলগাজার। তবে এ সময়ে তার সামান্যতম শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও দেখা দেয়নি। তিনি জানান, তিনি প্রতিযোগিতার জন্য নিবিড়ভাবে অনুশীলন করেছেন। এছাড়া রমজানের প্রথম দিন থেকে রোজা থাকছেন তিনি।
ফাতেমা জানান, প্রথম সপ্তাহে অনুশীলনের সময় আমার জন্য কষ্টসাধ্য বিষয় ছিল। আমাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুশীলন করতে হতো। এরপর আমি রুটিন করে নেয় এবং আমার শরীরও খাপ খাইয়ে নেয়। ফলে আমি আগের চেয়ে বেশি শক্ত বোধ করি। মানসিক ফোকাস ঠিক রাখতে রোজা আমাকে সহযোগিতা করেছে।
খালিজ টাইমস জানিয়েছে, দুবাইয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে ফাতেমা মিসরের শক্তিশালী নারীর মুকুট অর্জন করেন।
মন্তব্য করুন