ইসরায়েলের সঙ্গে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে নিজেদের জবাব জানিয়ে দিয়েছে হামাস। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি। খবর আলজাজিরার।
বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন সংগঠনের নেতারা। এসবের মধ্যে রয়েছে ত্রাণসহায়তা ও আশ্রয়, পুনর্গঠন, দীর্ঘ ১৭ বছরের অবরোধ প্রত্যাহার এবং বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
নতুন এই চুক্তিটির মধ্যস্থতার করছে কাতার ও মিসর। গত রোববার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে দেশ দুটির কর্মকর্তারা। ওই বৈঠক থেকেই হামাসের কাছে যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।
কাতার বলছে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে হামাস। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি এই কথা জানিয়েছেন।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর পঞ্চমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন ব্লিঙ্কেন। তার সফর ঘিরে গাজায় আরেকটি যুদ্ধবিরতির স্বপ্ন দেখছেন ফিলিস্তিনিরা। বিভ্ন্নি গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে ইতিবাচক ঘোষণা আসতে পারে। ইতোমধ্যে হামাসের জবাব ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার দোহায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্লিঙ্কেন বলেন, এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, একটি চুক্তি সম্ভব এবং প্রকৃতপক্ষে অপরিহার্য। আমরা এটি অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে যাব।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে ১৩০ জনের মতো বন্দি আছেন।
দিন যত সামনে এগোচ্ছে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করাতে নেতানিয়াহু সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। গত ২২ জানুয়ারি নেসেটে ইসরায়েলি অর্থ কমিটির বৈঠক চলার সময় ২০ জনের একটি দল সংসদ সদস্যরা যেন বন্দিদের মুক্ত করতে আরও ভূমিকা রাখেন সে দাবিতে সেখানে ঢুকে পড়েন। এর মাধ্যমে বন্দিদের মুক্তি নিয়ে ইসরায়েলি সমাজে বিভাজন প্রকট আকার ধারণ করছে বলেই ইঙ্গিত দেয়।
এমন পরিস্থিতিতে এ বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন কর্মকর্তরা বলছেন, এবারের যুদ্ধবিরতি ৪০ দিনের মতো স্থায়ী হতে পারে। এ সময় হামাসের হাতে এখনো আটক বেসামরিক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ ছাড়া পরবর্তী ধাপে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে সেনা ও ইসরায়েলি জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তর করবে হামাস।
মন্তব্য করুন