ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সুযোগ বুঝে শুধু কথার ফুলঝরি ছড়িয়ে যাচ্ছে। তবে এই দিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি বিদ্রোহীরা। অসহায় ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর অংশ হিসেবে ইসরায়েল ও তাদের মিত্র পশ্চিমাদের জাহাজে একের পর এক হামলা করে চলেছে ইরানপন্থি এই গোষ্ঠীটি। তাদের দমনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পাল্টা হামলা চালালেও কোনোভাবে থামাতে পারছে না। পশ্চিমাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আজ মঙ্গলবারও দুটি মার্কিন ও ব্রিটিশ জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হামাসের মিত্র হুতি যোদ্ধারা। এ ছাড়া হামলা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছে গোষ্ঠীটি। খবর আলজাজিরার।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ইয়েমেনের হোদেইদাহ বন্দরের পশ্চিমে এ হামলা চালিয়েছে হুতিরা। হামলার শিকার জাহাজ দুটি হলো মর্নিং টাইড ও স্টার নাসিয়া। এদের প্রথমটি বার্বাডোসের পতাকাবাহী ব্রিটিশ মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ এবং অন্যটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী মার্কিন জাহাজ।
হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি দুই জাহাজে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আত্মরক্ষার্থে শত্রুপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আরও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হবে।
গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে এরই মধ্যে সাড়ে ২৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হুতিরা বলছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি এবং ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে তারা লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা করে আসছে।
মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ৩০টির বেশি জাহজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা।
হুতিদের হামলার জবাবে বেশ কয়েকটি দেশের সমন্বয়ে একটি টহল জোট গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই জোট গঠন করেও ইরানপন্থি যোদ্ধাদের থামাতে না পেরে ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইয়েমেনের ১৩টি এলাকায় হুতি বিদ্রোহীদের ৩৬টি স্থাপনায় একযোগে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এত বড় হামলার পর সোমবারও হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী।
তবে হুতিদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া বলেন, গাজায় অবরোধ প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন না থামালে ইসরায়েলি জাহাজ এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনের বন্দরগামী জাহাজে হামলা অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন