গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি বন্দিদের সাথে দুর্ব্যবহার বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একজন মানবাধিকার কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক বেশকিছু ফিলিস্তিনিকে অজানা স্থানে কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্দি এবং তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
মানবাধিকার কর্মকর্তা অজিথ সুংহে তার রিপোর্টে বলেন, এসব ফিলিস্তিনি পুরুষদের ৩০ থেকে ৩৫ দিন ধরে আটক রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার গাজা সফরের সময় সেখানে মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকজন বন্দির সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
অজিথ সুংহে তার রিপোর্টে বলেন, আটককৃতদের মধ্য থেকে পরবর্তীতে কয়েকজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রচণ্ড ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেও পর্যাপ্ত পোশাক ছাড়াই তাদের শুধু ডায়াপার পরিয়ে রাখা হয়েছিল। তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। তারা সবাই প্রচণ্ডভাবে শকড ছিল এবং তাদের সঙ্গে দেখা করার সময় আমি নিজেও কেঁপে উঠেছি।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দ্বারা শেয়ার করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শত শত ফিলিস্তিনি পুরুষ তাদের অন্তর্বাস খুলে বাইরে ঠান্ডায় বসে আছে, কখনও কখনও তাদের চোখ ও বেঁধে রাখতে দেখা গেছে। কয়েকটি ভিডিওতে নারী ও শিশুদেরও দেখা গেছে।
ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর অনুসারে, মুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক বন্দি বলেছেন- নিজেদের অভিশাপ দেওয়ার জন্য এবং ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অপমান করার জন্য তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তাদের ওপর শারিরীক নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে তাদের ট্রাকে করে খোলা আকাশের নিচে আটকে রাখা হয়েছে।
এই মানবাধিকার কর্মকর্তা তার রিপোর্টে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সব গ্রেপ্তার বা আটক ব্যক্তিদের সাথে যেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নিয়ম ও মান অনুযায়ী আচরণ করা হয় সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের।
অজিথ সুংহে জোর দিয়ে বলেন, ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের উচিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বন্দিদের অধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান বজায় রাখা। ইসরায়েল যদি আটক রাখা প্রতিটি ব্যক্তির সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে তাদের অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে।
শুক্রবার গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আটক থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কয়েকজন বন্দি দক্ষিণ গাজার রাফাহ-এর আবু ইউসুফ আল নাজ্জার হাসপাতালে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
সূত্র : আল জাজিরা
মন্তব্য করুন