দেড় মাসের বেশি সময় ধরে চলা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধে সাময়িক বিরতিতে সম্মত হয়েছে উভয়পক্ষ। কাতারের মধ্যস্থতায় দুপক্ষের মধ্যে বন্দিবিনিময় ও সাময়িক যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন নারী ও শিশুসহ বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি। এসব ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগারে নিয়মিত নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া আবু ইউসুফ আবু মারিয়া সেখানকার অবস্থা আলজাজিরাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি কারাগারে প্রতিদিন কর্তৃপক্ষ তাদের ওপর তাণ্ডব চালাত। এমনকি কারাগারে তারা মারধরের শিকারও হয়েছেন।
তিনি বলেন, কারাগারে ইসরায়েলিরা তাদের ঠিকমতো খাবারও দেয়নি।
আবু মারিয়া অফার কারাগারে বন্দি ছিলেন। তিনি জানান, তিনি সেখানে আহত হয়েছিলেন। তবে কারাগারে তাকে কোনো ধরনের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়নি।
কারাগার থেকে বের হয়ে মুক্তির আনন্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা অবিশ্বাস্য এক আনন্দ। তবে যারা কারাগারে রয়ে গেছে আমি তাদের জন্য ব্যথিত।
এর আগে গতকাল মুক্তি পাওয়া এক নারী নিজের সাথে ঘটে যাওয়া দুর্বিষহ স্মৃতির বর্ণনা দেন। আলজাজিরাকে তিনি জানান, ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন নারী বন্দিরা। তাদের যৌন হেনস্তার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনারা।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে রুকাইয়া আমরো নামের এক নারীর কাছে আলজাজিরার সাংবাদিক আবদেল হামিদ জানতে চান যে, অন্য বন্দিদের মতো তিনিও কারাগারে যৌন হেনস্তার হুমকির মুখোমুখি হয়েছেন কি না। এর জবাবে তিনি হ্যাঁসূচক উত্তর দেন। তার আগে মুক্তি পাওয়া অন্যরাও একই ধরনের অভিযোগ করেছেন।
রুকাইয়া বলেন, তারা আমাদের বানানো ভিডিও দেখাত। কিন্তু মেয়েরা এসব দেখতে প্রত্যাখ্যান করত। এমনকি ইসরায়েলি গার্ডরা তাদের বলত যে দেখা আমরা তোমার সাথেও এমন করতে চলেছি। এটা এমন সব বিষয়ে যা আমি বলতেও পারব না।
এর আগে বন্দিদের সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ করেন ফিলিস্তিনিরা। জেনিনের বাসিন্দা মোহাম্মাদ নাজেল নামের এক তরুণ জানান, সপ্তাহখানেক আগে ইসরায়েলের গার্ডরা পিটিয়ে তার হাত ও আঙুল ভেঙে দিয়েছে। তার অভিযোগ, কারাগারে তাকে ন্যূনতম চিকিৎসাও দেয়নি। কেবল ফিলিস্তিনে হস্তান্তর করার সময় রেড ক্রসের সদস্যরা তার ভাঙা হাত একটি কাপড়ে ঝোলানো অবস্থায় পাঠিয়েছেন।
মন্তব্য করুন