ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হলেও মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছে পশ্চিমারা। শুধু তাই নয়, যেসব আরব মানবাধিকার ও গণমাধ্যম সংস্থা গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার সমালোচনা করছে কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কবার্তা ছাড়াই তাদের অর্থ সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে পশ্চিমা দাতারা। আরব বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকারকর্মীর বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
এ প্রতিবেদন করতে গিয়ে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড, লেবানন ও মিসরের বেশ কয়েকজন মানবাধিকারকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছে আলজাজিরা। তারা সবাই এক বাক্যে বলেছেন, অনেক পশ্চিমা দাতা আরব সংবাদমাধ্যম, মানবাধিকার গোষ্ঠী ও চিন্তক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া আর্থিক সহায়তা স্থগিত করে দিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলি নাগরিক হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে নিয়ে আসে হামাস। এই দিন থেকেই হামাসকে নিশ্চিহ্নের নামে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজারের বেশি নারী ও শিশু রয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য অনুযায়ী, হামাসের হামলার কয়েক দিন পরই গাজা ও পশ্চিম তীরে দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করে দেয় অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, জার্মানি ও সুইডেন। তাদের স্থগিত করে দেওয়া অর্থের পরিমাণ ১৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পশ্চিমারা অর্থসহায়তা বন্ধ করে দেওয়ার কারণে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, পশ্চিম তীরের সরকার ও মানবাধিকার সংস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এই চার দেশের পর ১১ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছয়টি ফিলিস্তিনি ও পাঁচটি ইসরায়েলি সংস্থাকে লাখ লাখ ডলারের অর্থ সহায়তা স্থগিত করে দেয়। যদিও নিজেদের কার্যক্রম নিয়ে বেশ ইতিবাচক পর্যালোচনা প্রতিবেদন দিয়েছিল এসব সংস্থা।
এই ১১ সংস্থার একটি মিফতাহ। সংস্থাটি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে গণতন্ত্র ও সুশাসন উন্নয়নে কাজ করে। মিফতাহর পরিচালক জাইদ আমালি বলেন, আমাদের মনে হয়, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ডানপন্থি গোষ্ঠীর চাপের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
অন্যদিকে মিসরের ইনিশিয়েটিভ ফর পার্সোনাল রাইটসের (ইআইপিআর) নির্বাহী পরিচালক হোসাম বাঘাত বলেছেন, পশ্চিমাদের প্রতি ক্রোধ ও বিরক্তি শুধু আমাদের জনগণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা আমাদের মধ্যেও আছে। আমরা জানি না আমরা আদৌ পশ্চিমের কিছু সরকার বা অংশীদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব কি না।
মন্তব্য করুন