ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রকেটের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজার হাজার ইহুদি। গন্তব্য হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন সাইপ্রাসের লারনাকা শহরকে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান্স।
লারনাকা শহরে ইহুদিদের প্রধান ধর্মীয় নেতা অ্যারি রাসকিন জানান, প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ইহুদি এই শহরে আসছেন। হামাসের হামলার পর শান্তির খোঁজে সাইপ্রাসে এসেছেন ১৬ হাজারের বেশি ইসরায়েলি।
অ্যারি রাসকিন জানান, প্রতিদিন মাথার ওপর দিয়ে ধেয়ে চলা রকেটের শব্দ যারা সহ্য করতে পারছেন না, এমন সব মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন কমিউনিটি সেন্টারটিতে। তাদের বিছানা, খাবার, অস্থায়ী থাকার জায়গা; সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছু দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল পেরেজ নামের একজন ইসরায়েলি নাগরিক বলেন, সব ঝঞ্ঝাট, রকেট হামলা, সংঘাত থেকে তারা দূরে থাকতে চেয়েছিলেন। তাই দেশছেড়ে কয়েক বন্ধুকে নিয়ে সাইপ্রাসে চলে এসেছেন। জানান, এখানে এসে নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন তারা।
দ্য গার্ডিয়ান জানায়, প্রায় দেড় মাস ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জবাবে দেশটিতে বড় ধরনের হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায়ও অনেক ইহুদি সাইপ্রাসে চলে যাচ্ছেন।
দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসকে নিরাপদ ‘স্বর্গরাজ্যে’ বলছেন ইউনিভার্সিটি অব নিকোশিয়ার ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হুবার্ট ফাউস্টম্যান। তবে সিরিয়া ও লেবানন থেকে যদি শরণার্থীরা এখানে আসেন তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। বলেন, এতে এখানে সংকট তৈরি হতে পারে।
গেল কয়েক সপ্তাহে শুধু ইসরায়েলিরাই সাইপ্রাসে যাননি, গিয়েছেন অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও। সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনস্তান্তিনোস কম্বোসের ধারণা, সংঘাতের কারণে লেবাননসহ এ অঞ্চলের ১ লাখের বেশি মানুষ সাইপ্রাসে প্রবেশ করেছেন।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাতে নিরপেক্ষ অবস্থানে নিয়েছে সাইপ্রাস। হামলার জন্য গোষ্ঠীটির নিন্দা জানালেও গাজার নিরপরাধ মানুষের জন্য সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্তোদোউলিদেস। অবরুদ্ধ গাজায় সাগরপথে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে একটি মানবিক করিডর তৈরির প্রস্তাবও দিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন